শাসকদলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জের

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ প্রকল্পের কাজ

শাসকদল তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হল একশো দিনের কাজ। ইলামবাজারের গোলটিকুরী গ্রামে ওই প্রকল্পে নিকাশি নালা সংস্কার শুরু হলে কাজটি কোন গোষ্ঠী করবে, তা নিয়েই দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইলামবাজার শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৫ ০১:০২
Share:

শাসকদল তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হল একশো দিনের কাজ। ইলামবাজারের গোলটিকুরী গ্রামে ওই প্রকল্পে নিকাশি নালা সংস্কার শুরু হলে কাজটি কোন গোষ্ঠী করবে, তা নিয়েই দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সোমবারের ওই ঘটনায় জখম হন দু’পক্ষের আট জন। আর তার পরেই বন্ধ হয়ে যায় কাজ।

Advertisement

মঙ্গলবার ইলামবাজারের বিডিও উৎপল পাতসা বলেন, “স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে, সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত কাজ করার জন্য।” যদিও সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হলেও ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেনি প্রশাসন। এমনকী, সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুই গোষ্ঠীও থানায় লিখিতও অভিযোগ দায়ের করেনি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের বদলে বিষয়টি মিটমাট করতে এগিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় ব্লক নেতৃত্ব। দু’পক্ষকে নিয়ে দ্রুত বৈঠক করে একটি কমিটি গড়ে অবিলম্বে ওই কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা বলে জানা গিয়েছে।

সে কথা মেনে নিয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি জাফারুল ইসলাম মঙ্গলবার বলেন, “সোমবার ইলামবাজার দলীয় কার্যালয়ে সকলকে ডাকা হয়েছিল। আলোচনা হয়েছে। অবিলম্বে কমিটি করে গ্রামের নিকাশি নালা সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য বলা হয়েছে।” তার পরেও যে দুই বিবাদমান গোষ্ঠীর মধ্যে কোনও গণ্ডগোল দেখা যাবে না কিংবা উন্নয়নের কাজ বন্ধ হবে, তার কি নিশ্চিয়তা রয়েছে? জাফারুলের জবাব, “তিনি যেই হন, গ্রাম বাংলায় উন্নয়ন কাজ বন্ধ করতে দেওয়া হবে না। বৈঠকে সকলকে তা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের কাজ যারা বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”

Advertisement

ঘটনা হল, সোমবার স্থানীয় বিলাতি পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে একশো দিনের প্রকল্পে নিকাশি নালা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি শেখ নিয়ামত এবং তাঁর অনুগামীরা ওই কাজ শুরু করতে গেলে, দলে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত শেখ নাজির গোষ্ঠীর লোক জন বাধা দেয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার জেরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি ও পরে তা সংঘর্ষের চেহারা নেয়। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পুলিশ নজরদারিও বাড়ানো হয়। দিনের শেষে প্রকল্পের কাজই বন্ধ হয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে শাসকদল দু’পক্ষের বিবাদের কথা মুখে অস্বীকার করলেও গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতে দল যে মরিয়া তা স্পষ্ট ব্লক সভাপতির কথাতেই। দলীয় সুত্রের খবর, অবিলম্বে বিবাদ না মেটালে প্রয়োজনে ব্লক নেতৃত্ব তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে সোমবারের বৈঠকে দুই পক্ষকেই সতর্ক করেছেন জাফারুল। যদিও ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও কবে নিজেদের বৈঠক হবে এবং কবেই বা কমিটি গড়ে নালা সংস্কারের কাজ শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিবাদমান দুই গোষ্ঠী। ফলে ওই কাজ ঠিক কবে থেকে ফের শুরু হবে, তা নিয়েই ধন্দে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অঞ্চল সভাপতি শেখ নিয়ামত এবং দলে তার বিরোধী বলে পরিচিত শেখ নাজির, দু’জনেই এ দিন বলেছেন, “সোমবার ইলামবাজারে দলীয় কার্যালয়ে ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে, কমিটি গঠন করে ঠিক কবে কাজ শুরু হবে, সে নিয়ে এখন কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন