ডায়েরিয়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল বোরো থানার পলাশবনি গ্রামে।
পলাশবনির বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন মাহাতো (৬২) ১১ সেপ্টেম্বর বাড়িতে মারা যান। শনিবার রাতে নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় ছবিরানি মাহাতো (৩৫) নামে ওই গ্রামের আরও এক বাসিন্দারও। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিএমওএইচ (মানবাজার ২) কৌশিক ঢালি বলেন, ‘‘চিত্তরঞ্জন মাহাতো অন্য উপসর্গেও ভুগছিলেন। তিনি যে ডায়েরিয়াতেই মারা গিয়েছেন, তা বলা যায় না। তবে ছবিরানি মাহাতো ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। উনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হননি।’’ তাঁর দাবি, ছবিরানি দেবীর অসুস্থতা বিষয়য়ে তাঁদের কাছে কোনও
খবর আসেনি।
পলাশবনি ও লাগোয়া মলিয়ান গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিন দশেক ধরে সেখানে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিলেও কোনও মে়ডিক্যাল টিম গ্রামে যায়নি। পলাশবনির বাসিন্দা, পেশায় আইনজীবী প্রভাস মাহাতো বলেন, ‘‘স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী ও আশা কর্মীরা খোঁজ নিয়ে ওষুধ দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসকেরা গ্রামে এলে বাসিন্দারা একটু ভরসা পেতেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দা গঙ্গাধর মাহাতো, লক্ষ্মীকান্ত মাহাতোদের দাবি, পলাশবনির ৩৩ জন এবং মলিয়ানের ২ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
রোগ কোথা থেকে ছড়াচ্ছে? বিএমওএইচ জানান, পলাশবনির একটি পুকুরের জল থেকে ডায়েরিয়ার জীবাণু ছড়িয়েছে বলে তাঁদের অনুমান। তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সম্প্রতি অজানা কারনে ওই পুকুরের বহু মাছ মারা গিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে গিয়ে পুকুরটির জল ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন বাসিন্দাদের। স্থানীয় জলাশয়গুলিতে চুন এবং ব্লিচিং পাউ়ডার ছড়ানো হচ্ছে।’’
চিকিৎসকদের গ্রামে না যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএমওএইচ। তাঁর দাবি, তিনি নিজে ওই গ্রামে কয়েক বার গিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে গিয়ে নিয়মিত ওষুধ ও পরামর্শ দিচ্ছেন। পলাশবনিতে ঘুরে গিয়েছেন বিডিও (মানবাজার ২) তারানাথ প্রামাণিক। স্থানীয় বিধায়ক রাজীব সোরেন রবিবার মানবাজার ২ ব্লকের বারি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি থাকা রোগীদের দেখতে যান। রাজীববাবু বলেন, ‘‘ওষুধ এবং অন্য সরঞ্জামের জন্য যাতে চিকিৎসা ব্যহত না হয় তা বিএমওএইচকে দেখতে বলেছি।’’
বিএমওএইচ-এর দাবি, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। রবিবার সকালে শুধু দু’জন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন।