আত্মসমর্পণ করেও জামিন পেলেন না দীপক ঘোষ

এক বছর ধরে ফেরার থাকার পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন খয়রাশোলের তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় খুনে অন্যতম অভিযুক্ত দীপক ঘোষ এবং প্রলয় চট্টোপাধ্যায়। প্রলয়বাবু দলের তেমন কোনও পদাধিকারী না হলেও দীপক ঘোষ খয়রাশোলের দাপুটে তৃণমূল নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩৪
Share:

এক বছর ধরে ফেরার থাকার পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন খয়রাশোলের তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় খুনে অন্যতম অভিযুক্ত দীপক ঘোষ এবং প্রলয় চট্টোপাধ্যায়। প্রলয়বাবু দলের তেমন কোনও পদাধিকারী না হলেও দীপক ঘোষ খয়রাশোলের দাপুটে তৃণমূল নেতা।

Advertisement

শুক্রবার সরকারি আইনজীবী মণিলাল দে বলেন, ‘‘এ দিন ওই দুই অভিযুক্ত দুবরাজপুর আদালতে অত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেননি। উভয়কেই ১২ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন।’’ আগামী ২৬ অগস্ট অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজির করানো হবে।

গত ১৬ অগস্ট রাত ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ মনসা পুজোর জন্য ফল কিনতে বেরিয়ে বাড়ি থেকে একশো মিটার দূরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের খয়রাশোলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়। দু’টি মোটরবাইকে পাঁচ জন দুষ্কৃতী ওই হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। পরের দিন দলেরই বিরোধী অশোক ঘোষ (যিনি ২০১৩ সালের অগস্টে একই ভাবে খুন হয়েছিলেন। আর খুনেই অশোক মুখোপাধ্যাই প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন) গোষ্ঠীর নেতা কর্মী ও অনুগামী মিলিয়ে মোট ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অশোক ঘোষের ভাই দীপক ঘোষ, ছেলে বিশ্বজিৎ ঘোষ, অজিত ধীবর-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর নাম ছিল।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই নেতাকে খুন করতে বরাত দেওয়া হয়েছিল ভাড়াটে খুনিদের। বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতা-কর্মী সহ পাঁচ জন ভাড়াটে খুনিকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু, অজিত ধীবর বা দীপক ঘোষদের নাগাল পায়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত গত ৫ ডিসেম্বর খয়রাশোলের ওই নেতা খুনে যে ১৮ জনের বিরুদ্ধে দুবরাজপুর আদালতে পুলিশ চার্জশিট পেশ করে, তাতে নাম ছিল দীপক ঘোষ, বিশ্বজিৎ ঘোষ, প্রলয় চট্টোপাধ্যায়, অজিত ধীবরদের। বিশ্বজিৎ আগেই জামিন পেয়েছেন। গত ২২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছিলেন খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য অজিত ধীবরও। দীপকবাবু এবং প্রলয়বাবুই কেবল অধরা ছিলেন। শুক্রবার উভয়েই আত্মসমর্পণ করায় তা সম্পন্ন হল। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিন সুপারি কিলার বাদ দিলে চার্জশিটে নাম থাকা ১৩ জনই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

এ দিকে, প্রথম দিন থেকেই ওই খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন দীপকবাবুরা তাঁদের দাবি ছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছিল। তাই গ্রেফতারি এড়িয়ে বরাবর আগাম জামিনের চেষ্টা করছিলেন দীপক ঘোষের। এ দিনও উভয়েই দাবি করেছেন, তাঁরা নির্দোষ। উভয়ের পরিবার এবং অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অভিজিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওই খুনের মামলায় আগাম জামিন চেয়ে তাঁর মক্কেলরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। গত ২৭ জুলাই তার শুনানি হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত তিন সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়ে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনেই দীপকবাবুরা আত্মসমর্পণ করেন। যদিও তাঁদের জামিনেন আবেদন মঞ্জুর হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন