ছাতনার কমলপুরে সেতুর নীচের মাঝখানের অংশ বসে গিয়েছে। বন্ধ ভারী যান চলাচল। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
বর্ষার নিম্নচাপে সেতুর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল নদের জল। তখন থেকেই সেতুর হাল বিগতে শুরু হয়েছিল ধীরে ধীরে। সেতুর একাংশ বসে যাওয়ার পরে এতদিনে রুগ্ন অবস্থা নজরে এল প্রশাসনের।
বাঁকুড়া-পুরুলিয়া রাজ্য সড়কের ছাতনার কমলপুর এলাকায় দ্বারকেশ্বর নদের উপরের সেতুর এই হালের জন্য ওই রুটে বাস ও বড় গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এর ফলে সমস্যায় পড়ছেন বহু মানুষ। ছাতনা ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরমেশ্বর কুণ্ডু জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলেই খবর ছড়ায় সেতুর তলার স্ল্যাব বসে গিয়েছে। সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খবর পেলে স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও প্রশাসনকে। সন্ধ্যার মধ্যেই সেতুর অবস্থা খতিয়ে দেখে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করার নির্দেশ দেন প্রশাসনের কর্তারা।
পরমেশ্বরবাবুর কথায়, “বর্ষার নিম্নচাপে এই সেতুর উপর দিয়ে জল বয়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই সেতু দুর্বল হচ্ছিল। বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আগেই বিষয়টি নজরে পড়ায় রক্ষা হয়েছে।”
এই রাস্তার উপর দিয়ে দিনভর বহু যাত্রিবাহী বাস ও কলকারখানার মাল পরিবহণকারী ভারী গাড়ি চলাচল করে। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার পরে গাড়িগুলিকে কুমিদ্যা, কালপাথর হয়ে ঘুরিয়ে ৬০ এ জাতীয় সড়ক ধরে পুরুলিয়া পাঠানো হচ্ছে। তবে এই পরিস্থিতিতে ছোট গাড়ি চলাচল করছে। ছোট গাড়িগুলি সেতুতে ওঠার আগেই যাত্রীদের নামিয়ে খালি করে পারাপার করছে। সমস্যা কাটাতে দ্রুত সেতু মেরামতির দাবি তুলেছেন স্থানীয় মানুষজন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া এই রাস্তাটি পূর্ত (সড়ক) দফতরের। ওই দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপোজ্বল মণ্ডলের কথায়, “সেতুটির হাল খারাপ ছিল না। তবে এ বার বর্ষা ভাল হয়েছে। জলের তোড়ে সেতুটির ক্ষতি হয়েছে।” শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নীচে স্ল্যাব জলের তোড়ে ধসে গিয়েছে। আর তাতেই এই পরিস্থিতি। কবে সারানো হবে সেতুটি তার অবশ্য সুনির্দিষ্ট উত্তর দিয়ে পারেনি দফতর।
তপোজ্বলবাবু জানান, শীঘ্রই সেতুটি মেরামতির পরিকল্পনা ও বাজেট ঠিক করা হবে। প্রাথমিক ভাবে সংস্কারের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। যাতে দ্রুত ওই সেতু মেরামতি করার কাজ শুরু হয় সে বিষয়ে পূর্ত (সড়ক) দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা।
বাঁকুড়ার জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ওই রাস্তাটি জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সেতুটি না হওয়া পর্যন্ত ছোট গাড়ি চলাচলেও ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এলাকার মানুষও সমস্যায় পড়ছেন। দ্রুত যাতে সারাই কাজ করা হয় সে ব্যাপারে আমি পূর্ত (সড়ক) বিভাগকে বলেছি।”