ডাক্তারের নামে রিপোর্ট গেল

হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে যিনি ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে ফেরত পাঠিয়েছিলেন, সেই চিকিৎসকই নার্সিংহোমে ওই রোগীর কেমোথেরাপি করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০১:০৫
Share:

হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে যিনি ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে ফেরত পাঠিয়েছিলেন, সেই চিকিৎসকই নার্সিংহোমে ওই রোগীর কেমোথেরাপি করেছেন। এক রোগীর অভিযোগের তদন্ত করে এই মর্মে স্বাস্থ্যভবনে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বলে শুক্রবার জানালেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।

Advertisement

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে কেমোথেরাপি নিতে আসা ক্যানসার আক্রান্ত এক রোগীকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বাঁকুড়া মেডিক্যালের ক্যানসার বিভাগের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন, নার্সিংহোমে পাঠিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকই ওই রোগীকে কেমোথেরাপি দিয়েছিলেন।

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “অভিযোগকারী রোগী, অভিযুক্ত চিকিৎসক এবং ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমি জানতে পেরেছি, ওই চিকিৎসক যে নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত সেখানেই বহির্বিভাগ থেকে ফেরানো ওই রোগীকে যেতে বলা হয়। এবং ওই চিকিৎসকই নার্সিংহোমে তাঁকে কেমোথেরাপি করেন।” তিনি জানান, বিষয়টি স্বাস্থ্যভবনকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ আসবে সেই মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৌমিতাদেবী। চেষ্টা করেও ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে বাঁকুড়া মেডিক্যালের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসক আমাদের কাছে দাবি করেছেন, তিনি রোগীকে জানিয়েছিলেন, এখানে কেমোথেরাপি করাতে তাঁকে বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু ওই নার্সিংহোমে গেলে দেরি হবে না। তিনি এ নিয়ে কোনও চাপ দেননি।’’

Advertisement

মলদ্বারে ক্যানসারে আক্রান্ত তালড্যাংরার ভিমাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রণব ঘোষ গত জানুয়ারি মাসে চেন্নাইয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করান। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগে তিনি কেমোথেরাপি নিতে গেলে ওই চিকিৎসক তাঁকে গোবিন্দনগর এলাকার একটি নার্সিংহোমে যেতে বলেন বলে অভিযোগ। ডাক্তারের কথা শুনে নার্সিংহোমে গিয়ে মোটা টাকা খরচ করে তাঁকে কেমোথেরাপি নিতে হয়। বুধবার বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর কাছে তিনি অভিযোগ জানান। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছেও প্রণববাবু আলাদা করে অভিযোগপত্র জমা করেন। অভিযোগ পেয়েই বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান ও জেলাশাসক মৌমিতাদেবী তদন্ত শুরু করেন। পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “বাঁকুড়া মেডিক্যালে কেমোথেরাপি হয়। হাসপাতালে আসা কোনও রোগীকে নার্সিংহোমে যেতে বলাটাই অন্যায়। আগামী দিনে যাতে এমন না ঘটে, তার জন্য ক্যানসারের বিভাগীয় প্রধানকে সতর্ক করে দিয়েছি।” বাঁকুড়া মেডিক্যালের ক্যানসার বিভাগের প্রধান অমিতাভ রায় এ দিন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে কী বেরিয়ে আসে তা দেখেই যা বলার বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন