Durga Puja 2020

‘এই বয়সে ভাবিনি পুজোর আয়োজন করব’

আবাসিক শিপ্রা রায়, গায়ত্রী হাজরা, গৌরী দে বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো হল আপামর বাঙালির প্রাণের উৎসব।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ 

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৩
Share:

আয়োজনে ব্যস্ত বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকেরা। নিজস্ব চিত্র

পুজোর কটা দিন তাঁদের কাটত চার দেওয়ালের ভিতরে, বা জানলার গ্রিল ধরে বাইরে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে কেউ মা দুর্গার মুখ দেখেনি, আবার অনেকে উপবাসী থেকেও অষ্টমীর দিন অঞ্জলি দিতে পারেননি। তাই পুজোর দিনগুলি এক প্রকার বিষন্নতার মধ্য দিয়েই কাটাতেন শান্তিনিকেতনের একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকেরা।

Advertisement

এ বার আবাসিকেরা ঠিক করেন, নিজেরাই পুজোর আয়োজন করবেন। তাঁরা পুজোর নাম দিয়েছেন ‘আবাসিকদের পরিচালিত বৃদ্ধাশ্রমের পুজো’। পুজোর আযোজন ঘিরে অশক্ত শরীরেও উৎসাহে ফুটছেন আবাসিক বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। পুজোর নাড়ু তৈরি,ঘট আনা,পুজো মণ্ডপে আলপনা দেওয়া থেকে শুরু করে পুজোর সামগ্রী জোগাড় করা— সব কিছু তাঁরা নিজেরাই করছেন। প্রথম বছর বলে খানিকটা জাঁকজমক করে পুজো করার ইচ্ছে ছিল তাঁদের। কিন্তু সেই ইচ্ছায় বাধা সেধেছে করোনা পরিস্থিতি। অনাড়ম্বরেই পুজো সারা হবে বলে জানিয়েছেন আবাসিকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘না থাক জাঁক, পুজো তো হচ্ছে। এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। সবাই মিলে লেগে পড়েছে পুজোর কাজে।’’

শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটের ঠিক পিছনেই এই বৃদ্ধাবাস। এখানে জনা তিরিশেক আবাসিক রয়েছেন। এঁদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁদের বাড়িতে এক সময় ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হত। পুজোয় তাঁদের ব্যস্ততার সীমা থাকত না।

Advertisement

পুজোর আয়োজন থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনদের আপ্যায়নে দম ফেলার ফুরসত পেতেন না। আজ সে সব কিছুই নেই। বছরভর বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যে দিন কেটে যায়। ফলে, পুজো এলেই সেই অতীতের স্মৃতির এবং একাকিত্ব তাঁদের মনকে ভারাক্রান্ত করে তুলত।

আবাসিক শিপ্রা রায়, গায়ত্রী হাজরা, গৌরী দে বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো হল আপামর বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই বয়সে এসে ভাবিনি, এ ভাবে আমরা আবার পুজোর আয়োজন করতে পারব। তবে, এটা সম্ভব হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের জন্যই। আমাদের জীবনের এখন শেষ ঠিকানা হল এই আবাসন ,তাই আমরা যতদিন পারব এই আবাসনের পুজো চালিয়ে যাব।’’ ওই বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধার আব্দুস সামাদের কথায়, ‘পুজোর সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সেই ভাবনা থেকেই মনে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য পুজো হওয়াটা জরুরি। সেই ভাবনা আজ সফল হচ্ছে দেখে আমরা সবাই খুব খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন