পরিবেশ বাঁচাতে প্রচারে নয় প্লাস্টিক, নির্দেশ ঘিরে ধন্দ

এ বারের লোকসভা নির্বাচন পরিবেশবান্ধব করতে তৎপর নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছে কমিশনের নির্দেশ, ভোট-প্রচারে প্লাস্টিক ও পলিথিনের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে না।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

এ বারের লোকসভা নির্বাচন পরিবেশবান্ধব করতে তৎপর নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছে কমিশনের নির্দেশ, ভোট-প্রচারে প্লাস্টিক ও পলিথিনের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে না।

Advertisement

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, কমিশনের পক্ষ থেকে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জানানো হয়েছে, প্রচারে পরিবেশবান্ধব উপাদানই যেন ব্যবহার করা হয়। শুধু রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে নয়, একই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্থাকেও। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলা নির্বাচন আধিকারিক ও রিটার্নিং অফিসারদের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, কেন প্লাস্টিক বা পলিথিনের মতো সামগ্রী ব্যবহার করা উচিত নয়, তা নিয়ে যেন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের সচেতন করা হয়।

বীরভূমের নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলছেন, ‘‘এমন নির্দেশ রবিবারই নির্বাচন কমিশের তরফে এসেছে। আমরা চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব এই নির্দেশ পালন করতে।’’

Advertisement

কেমন ভাবে কমিশনের ওই নির্দেশকে দেখছে রাজনৈতিক দলগুলি?

মুখে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ কে স্বাগত জানালেও, প্লাস্টিক-পলিথিন বাদ দিয়ে প্রচার চালানোর বিকল্প কী হবে তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে তারা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন— ‘ফ্লেক্স, ফেস্টুন, ব্যানার, পতাকা এমনকী প্রতীকেও ওই সব সামগ্রী মিশে থাকে। এ বার তা হলে কী করা যাবে!’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘পরিবেশের ক্ষতির কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিয়ে থাকলে সেটা সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু বর্তমান যুগে ভোট প্রচারের অধিকাংশ উপাদানই প্লাস্টিক নির্ভর। তার খরচও তুলনায় কম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্লাস্টিক বা পলিথিন পুরোপুরি নিষিদ্ধ হলে আমাদের মতো দলের পক্ষে কিছুটা সমস্যা হবে। আগে কমিশনের নির্দেশ হাতে পাই, জেলা নির্বাচনী দফতরের সঙ্গে কথা বলি, তার পরেই বিকল্প পথ ভাবা হবে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের মন্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশন এমন নির্দেশ দিলে সেটা মেনে চলতে হবে। কিন্তু প্লাস্টিকের উপাদান ছাড়া ভোট প্রচার কী ভাবে হবে, বিকল্পই বা কী, তা ঠিক করতে পারিনি। আলোচনা চলছে।’’

জেলায় তৃণমূলের অন্যতম নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘একটা কথাই বলব, পরিবেশ রক্ষায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই আমরা ভোট প্রচার করব। কী ভাবে সেটা হবে তা আলোচনায় ঠিক করা হবে।’’

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, শুধু প্লাস্টিক বা পলিথিন যা মাটিতে মেশে না, এমন উপাদান নিয়েই চিন্তিত নয় নির্বাচন কমিশন। তাদের চিন্তা শব্দদূষণ নিয়েও। রাত ১০টার পর থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত জনসভা বা ভোট প্রচারে মাইক বা লাউডস্পিকারের ব্যবহারও তা-ই পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, পরিবেশবান্ধব নির্বাচন করানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ রাজনৈতিক দলগুলি কতটা মেনে চলে বা নির্দেশ লঙ্ঘিত হলে কী ধরণের ব্যবস্থাগ্রহণ করে কমিশন সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন