শুয়োর ফালাফালা করল প্রৌঢ়কে

জঙ্গলে গরু চরাতে গিয়ে বুনো শুয়োরের আক্রমণে মারা গেলেন এক ব্যক্তি। জখম হলেন ওই গ্রামেরই আরও এক গ্রামবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার নারকলি গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম পবন সোরেন (৪৮)। তাঁর বাড়ি ওই গ্রামেই। অর্জুন চক্রবর্তী নামে জখম ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১১:৪১
Share:

আহত অর্জুন চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

জঙ্গলে গরু চরাতে গিয়ে বুনো শুয়োরের আক্রমণে মারা গেলেন এক ব্যক্তি। জখম হলেন ওই গ্রামেরই আরও এক গ্রামবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার নারকলি গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম পবন সোরেন (৪৮)। তাঁর বাড়ি ওই গ্রামেই। অর্জুন চক্রবর্তী নামে জখম ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে।

Advertisement

নারকলি গ্রামটি মুকুটমণিপুর জলাধারের পশ্চিম প্রান্তে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীর চড়ায় নারকলি গ্রামের অনেকে তরমুজ চাষ করেন। কয়েক বছর ধরে জমিতে তরমুজ খেতে শুয়োরের পাল আসে। তবে এত দিন পর্যন্ত শুয়োরের হামলায় কেউ মারা যাননি।

রোজকার মতো এ দিন গরু চরাতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন পবনবাবু। তাঁর ছেলে খোকন সোরেন বলেন, ‘‘বাবা অন্যদিনের মতো এ দিনও গরু চরাতে জঙ্গলের দিকে গিয়েছিল। দুপুরে খবর পাই বাবাকে একটা বড়সড় শুয়োর হামলা করেছে। দৌড়ে গিয়ে দেখি, বাবাকে মাটিতে ফেলে পায়ে দাঁত ঢুকিয়ে ফালাফালা করে দিয়েছে। বাবা দু’হাত দিয়ে শুয়োরটাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। হাতের কাছে কিছু না পেয়ে একটা বড় গাছের ডাল নিয়ে শূয়োরটার পিঠে মারি। তাতে শুয়োরটা বাবাকে ছেড়ে আমার ওপর হামলা করে। ওর ধাক্কায় আমি মাটিতে পড়ে যাই।’’ তাঁর দাবি, শুয়োরটা তাঁর পেটে দাঁত বসিয়ে দেওয়ার জন্যে তেড়ে আসছিল। সেই সময় তিনি চিৎকার করায় তাঁর দাদা মহেন্দ্র একটা কুড়ুল নিয়ে ছুটে এসে আঘাত করে। তারপরেই শুয়োরটা জঙ্গলে ঢুকে যায়।

Advertisement

তারই আগে-পরে ওই গ্রামেই পেশায় চাষি অর্জুনবাবুকেও শুয়োরটি আক্রমণ করে। মানাবাজার হাসপাতালে তিনি বলেন, ‘‘দুপুরে বাড়ির পিছনে গরু হঠাৎ বিকট ভাবে ডাকতে শুরু করে। কী হয়েছে দেখতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ ঝোপের আড়াল থেকে একটা বিরাট চেহারার শুয়োর আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল। এত বড় মাপের দাঁতাল শুয়োর জীবনে দেখিনি।’’ তাঁর দাবি, মাথা নিচু করে শুয়োরটা তাঁর পেটে দাঁত ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। দু’হাত দিয়ে ধরে কোনওক্রমে তিনি রক্ষা পান। তবে দাঁত দিয়ে ততক্ষণে তাঁর দুই হাত ফালাফালা করে দেয় শুয়োরটি।

তাঁর চিৎকারে লোকজন ছুটে আসেন। শুয়োরটা হকচকিয়ে যায়। সেই সুযোগে তিনি হাতের কাছে থাকা একটা ছোট লাঠি দিয়ে শুয়োরটার চোখে আঘাত করে। সম্ভবত সেই চোটেই শুয়োরটা জঙ্গলের দিকে দৌড় লাগায়। রক্তাক্ত অবস্থায় গ্রামের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করেন।

বাসিন্দা শুকদেব হেমব্রম, তাপস পাল বলেন, ‘‘পবনবাবুর সারা শরীর বেয়ে রক্ত ঝরছিল। আঘাত থাকা স্থানে কাপড় বেঁধেও রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না। পবনবাবুর তখন জ্ঞান ছিল না। কাছাকাছি থাকা মানবাজার হাসপাতালে নিয়ে আসি।’’ গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয়েছিল পবনবাবুকেও। কিন্তু, পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন