নাতজামাইয়ের শোকে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বৃদ্ধার

দিদিশাশুড়ির জন্য ওষুধ আনতে গিয়ে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পায়ে চোট পেয়েছিলেন নাতজামাই। দীর্ঘ চিকিৎসাতেও ক্ষত সারছিল না। জখম পা কেটে বাদ দিতে হতে পারে বলে সম্প্রতি চিকিৎসক জানিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুঞ্চা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৩
Share:

দিদিশাশুড়ির জন্য ওষুধ আনতে গিয়ে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পায়ে চোট পেয়েছিলেন নাতজামাই। দীর্ঘ চিকিৎসাতেও ক্ষত সারছিল না। জখম পা কেটে বাদ দিতে হতে পারে বলে সম্প্রতি চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় ফটিক রায়ের (৫৪) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। সেই খবর পেয়েই অসুস্থ হয়ে প়ড়েন তাঁর দিদিশাশুড়ি। চিকিৎসক এসে জানান, মৃত্যু হয়েছে রূপালি রায় (৭৫) নামে ওই বৃদ্ধারও। পুঞ্চা থানার বারমেশিয়া গ্রামে শনিবার রাতের ঘটনা।

Advertisement

ফটিকবাবু পেশায় রেশন ডিলার ছিলেন। তাঁর তিন মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। খুড়তুতো ভাই বিদ্যুৎ রায়ের দাবি, ফটিকবাবু মিশুকে ছিলেন। কারও সঙ্গে বিবাদ ছিল না। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে ফটিকবাবুর স্ত্রী সুলেখাদেবী চা দেন। খেয়ে দোতলায় চলে যান ফটিকবাবু। কিছুক্ষণ পরে সুলেখাদেবী গিয়ে দেখেন ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখা যায়, সিলিং ফ্যান থেকে গলায় দড়ি দেওয়া ফটিকবাবুর দেহ ঝুলছে। নিঃসন্তান রূপালিদেবী বারমেশিয়া গ্রামেরই অন্য পাড়ায় ভাইপো শিশির রায়ের কাছে থাকতেন। শিশিরবাবু বলেন, ‘‘পিসিমা সুলেখা এবং ফটিককে খুবই ভালবাসতেন। ফটিকের খবরটা পেয়েই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। চিকিৎসক আসার আগেই সব শেষ!’’

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন ফটিকবাবু। রবিবার তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-র ডিসেম্বরে ফটিকবাবু মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পায়ে চোট পান। অস্ত্রোপচার করার পরেও ক্ষত শুকোয়নি। সম্প্রতি এক চিকিৎসক পা কেটে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন বলে পরিবারের দাবি।

Advertisement

রেশন ডিলার সমিতির পুরুলিয়া মহকুমা সমিতির সম্পাদক, পুঞ্চার লাখরা গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেশন ডিলার হিসাবে ফটিক রায়ের বিরুদ্ধে কেউ কোনও দিন অভিযোগ তোলেননি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে জলের মতো অর্থ খরচ হচ্ছিল। সেই নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে শুনেছি।’’

রূপালিদেবীর পরিজনদের দাবি, তিনি আগে এক বার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফটিকবাবুর দুর্ঘটনার পর থেকেই মানসিক ভাবে বেশ কিছুটা ভেঙে পড়েছিলেন। প্রায়ই আক্ষেপ করতেন, ওই দিন ওষুধ আনতে না বেরোলে হয়তো দুর্ঘটনা ঘটত না।

পরপর দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে রারমেশিয়ায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন