কাল ভোট ক্রীড়া সংস্থায়

এই নির্বাচন ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া শহরে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। একটি ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন হলেও তাতে রাজনীতির রং লেগেছে ভালই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০১:২৪
Share:

অবশেষে নির্বাচন হতে চলেছে মানভূম ক্রীড়া সংস্থায়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কাল, বৃহস্পতিবার এই নির্বাচন হবে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বেলা ১২টা থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। পদাধিকার বলে ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি তথা জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় জানিয়েছেন, এই মর্মে আদালত তাঁদের কাছে যা জানতে চেয়েছিল, তাঁরা জানিয়েছেন। ৮ জুন সংস্থার বিধি মোতাবেকই নির্বাচন হবে।

Advertisement

এই নির্বাচন ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া শহরে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। একটি ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন হলেও তাতে রাজনীতির রং লেগেছে ভালই। ইতিমধ্যেই দু’টি প্যানেল তৈরি হয়েছে। একটি প্যানেলের পক্ষে রয়েছে শাসক দল তৃণমূল। দলের শহর কমিটির সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডল এই প্যানেলকে জেতাতে মাঠে নেমেছেন। পাল্টা প্যানেলে রয়েছেন ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন কর্মকর্তা তথা প্রাক্তন বিধায়ক নটবর বাগদি। যিনি নিজে ময়দানের মানুষ বলেই জেলার ক্রীড়া মহলে পরিচিত। দু’টি প্যানেলেই জেলা ক্রীড়ার বেশ কিছু পরিচিত মুখ রয়েছেন।

ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে সংস্থার শেষবার বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছিল। সেই সভায় গঠিত কমিটির মেয়াদ ছিল দু’বছর। তার পর থেকে নানা কারণে সকাধারণ সভা আর হয়নি। ২০১২ সালের মে মাসে নিস্তারিণী কলেজের প্রেক্ষাগৃহে এই সভা হবে বলে ঠিক হলেও বহিরাগত কিছু লোকের বাধায় তা ভন্ডুল হয়ে যায়। এর পরে আদালতের রায়ে ২০০৯ সালের কমিটিই সংস্থার কাজকর্ম দেখভাল করছিল। ২০১৫ সালে বার্ষিক সাধারণ সভা করার জন্য ওই কমিটি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চায়। কমিটির দাবি, সদর্থক সাড়া না মেলায় ওই বছর অক্টোবরে সদস্যেরা জেলাশাসকের কাছে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

Advertisement

এর পরেই ক্রীড়া সংস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হয়। প্রাক্তন জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী গত বছর মার্চে ১৬ জনের একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন। কিন্তু, ক্রীড়া সংস্থার দুই সদস্য নতুন কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা ঠোকেন। পূর্বতন কমিটির এক সদস্য স্বরূপ ঘোষের দাবি, ওই মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ক্রীড়া সংস্থায় নির্বাচন করার নির্দেশ দেয়। সেই নির্বাচনই শেষ অবধি হতে চলেছে বৃহস্পতিবার।

তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংস্থার সদস্য কাজু রায় বলেন, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার ভার অ্যাডহক কমিটির হাতেই থাকছে। আমাদের আপত্তি, অ্যাডহক কমিটির সম্পাদক নিজেই ফের সাধারণ সম্পাদক পদে একটি প্যানেলের প্রার্থী। ফলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জেলাশাসক নিজে নির্বাচনের বিষয়টি দেখভাল না করে সেই কমিটির হাতেই তা ছেড়ে দিয়েছেন। আদালতেও আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি।’’ অন্য দিকে, সাংবাদিক বৈঠকে নটবর বাগদির দাবি, অ্যাডহক কমিটি বলছে হাত তুলে ভোট হবে। ব্যালট ব্যবহার না হলে তাঁরা নির্বাচন বয়কট করবেন বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

জেলাশাসক অবশ্য বলেছেন, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়া জেলাশাসককে দেখভাল করতে হবে, এই মর্মে আদালতের কোনও নির্দেশ আমি পাইনি। সংস্থার বিধি মোতাবেকই নির্বাচন হবে। সেখানে হাত তুলে বা ব্যালটে দু’ভাবেই নির্বাচনের কথা বলা রয়েছে। কী ভাবে নির্বাচন হবে, তা সংস্থার সদস্যরাই ঠিক করবেন। আমরা আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখব।’’ নির্বাচন স্বচ্ছ ও বিধি মেনেই হবে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা বৈদ্যনাথবাবু এবং অ্যাডহক কমিটির সম্পাদক অর্ধেন্দু ঘোষ। তবে, হাত তুলে না গোপন ব্যালটে ভোট হবে, তা অ্যাডহক কমিটি জানায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন