উপচে: রামপুরহাটের চাকমামাঠ। শুক্রবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
রাত আটটা থেকে শুরু হয়ে দশটা পর্যন্ত অঝোরে বৃষ্টি। তারপর রাতভর চলল টিপ টিপ করে। তাতেই জল জমল রামপুরহাট শহরের বিভিন্ন রাস্তায়।
রামপুরহাট লোটাস প্রেসের গলি, কামারপট্টি থেকে ভাঁড়শালা পাড়া যাওয়ার রাস্তা, নিশ্চিন্তিপুর ছ’ফুঁকো এলাকায় এমনিতেই অল্পবৃষ্টিতে জল জমে যায়। সেখানে বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে ওই সমস্ত রাস্তার অনেক জায়গাতেই হাঁটুজল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। জল জমেছে জাতীয় সড়কের মাড়গ্রাম মোড়, লোটাস প্রেস ছাড়িয়ে টাইগার মিলের গলি, ধূলাডাঙার রাস্তা, ছ’ফুঁকো থেকে পাখুড়িয়া যাওয়ার রাস্তাতেও। শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে যাওয়া কাঁদর ছাপানো জলে ডুবেছে চাকলামাঠ এলাকার একাংশ। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত জমা জল না সরায় এলাকার পঁচিশ-তিরিশটি পরিবার জলবন্দি অবস্থায় বাস করছেন। শুক্রবার বেলা বাড়তেই অবশ্য ধূলাডাঙা রোড, পাখুড়িয়া রোড এলাকার জমা জল সরতে শুরু করে।
একটু বৃষ্টিতেই এ ভাবে জল জমে যাওয়ায় শহরবাসীর একাংশ পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন। ধূলাডাঙ্গা রোডে জল জমেছে নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটির জন্যেই। একই ভাবে পাখুড়িয়া রোডে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ছ’ফুঁকো, পাখুড়িয়া-সানঘাটা সেতু এলাকায় জল জমে। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, সৌন্দর্যায়ণের জন্য পথবাতি, এলইডি আলোর ব্যবস্থা করা হলেও নিকাশি নালা তৈরি না হওয়ায় কাঁদর ছাপানো জলে রাস্তা ডুবেছে। চাকলা মাঠবাসীর জানাচ্ছেন, এলাকার জল নিকাশির জন্য গত বছর কাঁদরের সঙ্গে সংযোগ করে একটি নিকাশি নালা নির্মাণ করা হয়। কাঁদরের সঙ্গে সংযোগস্থলের জায়গা নীচু হয়ে থাকায় কাঁদর ছাপানো জল সহজেই নীচু জায়গা দিয়ে ঢুকে এলাকাকে জলবন্দি করছে। এর জন্য পুরসভার অপরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকারের অবশ্য দাবি, ‘‘ছ’ফুঁকো এলাকার নির্মীয়মাণ রেলসেতুর ত্রুটির জন্য কাঁদরের জল ছাপিয়ে এলাকায় জল ঢুকেছে।’’ পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি শুক্রবার সকালে এলাকা ঘুরে দেখেন। তাঁর দাবি, ‘‘অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলেই কাঁদরের জল ছাপিয়ে কোনও কোনও এলাকায় জল ঢুকেছে। নিকাশি ব্যবস্থার কোনও ত্রুটি নেই।’’ পুরপ্রধান নিকাশির ত্রুটির কথা মানতে না চাইলেও তিনিই বলছেন, ‘‘শহরের নিকাশি ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে একটা মাস্টার প্লান করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে তার অনুমতি মিললেই কাজ শুরু হবে।’’