ইএসআই হাসপাতাল রঘুনাথপুরে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে গিয়েছেন রঘুনাথপুরের ইন্ড্রাস্টিয়াল করিডর তৈরি হবে। এ বার সেই রঘুনাথপুরে শ্রমিক-স্বার্থে ইএসআই হাসপাতাল তৈরির ভাবনার কথা জানিয়ে গেলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:০২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে গিয়েছেন রঘুনাথপুরের ইন্ড্রাস্টিয়াল করিডর তৈরি হবে। এ বার সেই রঘুনাথপুরে শ্রমিক-স্বার্থে ইএসআই হাসপাতাল তৈরির ভাবনার কথা জানিয়ে গেলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক।

Advertisement

রবিবার থেকে রঘুনাথপুর শহরের এ-টিম ময়দানে শুরু হয়েছে দু’দিনের শ্রমিক মেলা। এ দিন সেই মেলার উদ্বোধনে এসে শ্রমমন্ত্রীর মুখে তাঁর দফতরের পরিকল্পনার কথা শুনে খুশির হাওয়া ছড়াল রঘুনাথপুরে। অনুষ্ঠানে ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি, রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় ও শ্রম দফতরের কর্তারা।

এ দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুরপ্রধান শ্রমমন্ত্রীর কাছে শ্রম দফতরের উদ্যোগে রঘুনাথপুরে ইএসআই হাসপাতাল শুরুর জন্য প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘‘শিল্পতালুক গড়ে উঠছে রঘুনাথপুরে। সেই প্রক্ষিতেই এখানে শ্রমিকদের স্বার্থে ইএসআই হাসপাতাল করার জন্য শ্রমমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব রাখছি।’’ পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মলয়বাবু জানান, রঘুনাথপুরে ইএসআই হাসপাতাল করার পরিকল্পনা আছে শ্রম দফতরের। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিলিগুড়ি, হলদিয়াতে ইএসআই হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। রঘুনাথপুরেও এই হাসপাতাল করার পরিকল্পনা আছে শ্রম দফতরের।”

Advertisement

শ্রমমন্ত্রী হাসপাতালের জন্য মহকুমাশাসককে জমি দেখতে বলেন। মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রীকে সেখানেই জানান, ইএসআই হাসপাতাল তৈরির জন্য প্রশাসনের হাতে পর্যাপ্ত জমি রয়েছে। দেবময়বাবু বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই রাজ্যের শ্রম দফতর চিঠি দিয়ে মহকুমা প্রশাসনের কাছে এই এলাকায় ইএসআই হাসপাতাল করার মতো জমি আছে কি না জানতে চেয়েছে। এ দিন শ্রমমন্ত্রীকে জানিয়েছি, জমির সমস্যা হবে না।’’

তবে হাসপাতাল তৈরি করা সময়সাপেক্ষ হওয়ায়, আপাতত জরুরি ভিত্তিতে রঘুনাথপুরে ইএসআই হাসপাতালের বহির্বিভাগ শুরু করতে চাইছে শ্রম দফতর। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আপাতত আমরা রঘুনাথপুর ইএসআই হাসপাতালের সার্ভিস ডিসপেনসারি শুরু করতেই পারি।” ইএসআই হাসপাতাল হলে ইএসআই কার্ড থাকা শ্রমিকেরা স্বল্প খরচে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পাবেন। বর্তমানে এই এলাকার বহু শ্রমিকই আসানসোলের ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান।

রাজ্য সরকার শ্রমিকদের জন্য কী কী প্রকল্প নিয়েছে, তা মেলায় আসা লোকজনের কাছে তুলে ধরেন মন্ত্রী ও আমলারা। মন্ত্রী জানান, গত বছরেই শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার যত প্রকল্প ছিল, সেগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। পুরুলিয়ার মতো জেলায় এই প্রকল্পে বেশি সংখ্যক শ্রমিকদের আনার জন্য আরও প্রচারের প্রয়োজন।

তবে শ্রমিক মেলাতেও ঘুরেফিরে এসেছে রাজনীতির প্রসঙ্গ। বর্তমান রাজ্য সরকার মেলার নামে হাজার হাজার টাকা খরচ করছে বলে বিরোধীদের তোলা অভিযোগকে নস্যাৎ করতে এই ধরনের মেলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি। মলয়বাবুর দাবি, ‘‘শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার প্রকল্প ২০০০ সাল থেকে শুরু হয়েছে। ওই সময় থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বামফ্রন্ট সরকার এই প্রকল্পে মাত্র নয় কোটি টাকা খরচ করেছে। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শ্রমিকদের উন্নয়নে আমাদের সরকার মাত্র ছ’বছরে ওই প্রকল্পে খরচ করেছে ১ হাজার ৮ কোটি টাকা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন