ভেঙে ফেলা হচ্ছে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে থাকা দোকানঘরগুলির অবশিষ্ট অংশ। —নিজস্ব চিত্র।
ঘোষণা মাফিক নির্বিঘ্নেই উচ্ছেদ অভিযান হল সিউড়ি হাসপাতালে। সিউড়ি পুরসভার উদ্যোগে পুলিশের উপস্থিতে রবিবার সকাল ১০টা থেকে জেলা হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর লাগোয়া শতাধিক অস্থায়ী দোকান ভেঙে ফেলা হল। অভিযান চলল দিনভর। এই উচ্ছেদ-পর্বের মূল লক্ষ্যই হল সিউড়ি জেলা হাসপাতালের গা ঘেঁষে থাকা নিকাশি নালাটি পুনরুদ্ধার করে সংস্কার করা।
শুক্রবার সকালে সিউড়ি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যুর পরেই পুরসভা নড়েচড়ে বসে। কারণ ওই নিকাশি নালার উপরেই অবৈধ ভাবে কয়েক দশক ধরে শতাধিক দোকান গড়ে উঠেছিল। তার জেরে হাসপাতালের মূল নিকাশি নালাটিই কার্যত ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছিল। হোটেল, মনোহারি, চা-তেলেভাজার দোকান থেকে ফল, সব্জির দোকান, লটারির কাউন্টার— সবই ছিল সেখানে। ছিল ট্যাক্সি, টোটো স্ট্যান্ডও। নিকাশি ব্যবস্থা পুরোপুরি নষ্ট হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমছিল হাসপাতাল চত্বরে। নোংরা জল ভেঙে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করতে সমস্যায় পড়ছিলেন রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়েরা। পাশাপাশি জেলা হাসপাতাল হয়ে উঠেছিল মশাদের অবাধ প্রজনন ক্ষেত্র। বহুবার পুরসভাকে বলেও দখলদারি হটিয়ে সেই নিকাশি নালা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত মশাবাহিত রোগে হাসপাতালে একটি মৃত্যুর ঘটনা অনুঘটকের কাজ করল।
দখলদার না হটালে যে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়, সারসত্যটা বুঝতে দেরি হয়নি পুরসভার। তাই পুরসভা উচ্ছেদের নোটিস দেয় শুক্রবার রাতেই। মাইকে প্রচার চালিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দখলদারদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সহযোগিতা করতে বাধ্য হয়েছেন দখলদারেরা। শনিবার রাতেই অধিকাংশ জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছিলেন তাঁরা। যেটুকু অবশিষ্ট ছিল রবিবার যন্ত্র দিয়ে তা পরিষ্কার করা হল। উচ্ছেদ অভিযানে খোদ পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, উপপুরপ্রধান বিদ্যাসাগর সাউ এবং অন্যান্য কাউন্সিলরেরা উপস্থিত ছিলেন। পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সিউড়িবাসী।