ভালবাসার টানে এলেন লাভপুরের প্রাক্তন বিডিও

কর্মসূত্রে বদলি হলেও ভালোবাসার টানে শুক্রবার ভাইফোঁটা নিতে ছুটে এসেছিলেন তিনি।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

লাভপুর শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বছর খানেক আগে পদোন্নতি হওয়ায় অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাসের শিকড় লাভপুরে রয়ে গিয়েছে। কর্মজীবনের কিছুটা সময়েই আত্মিকতার টান তৈরি হয়েছিল লাভপুরের বাসিন্দাদের সঙ্গে বিডিও জীবনকৃষ্ণবাবুর। কর্মসূত্রে বদলি হলেও ভালোবাসার টানে শুক্রবার ভাইফোঁটা নিতে ছুটে

Advertisement

এসেছিলেন তিনি।

প্রাক্তন বিডিও’র উপস্থিতিতে এদিন ভাইফোঁটা হয়ে উঠল ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আক্ষরিক অর্থেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনুষ্ঠান। এদিন গণ ভাইফোঁটার আয়োজন করে লাভপুরের জামনা নিত্য সংঘ। জীবনবাবু বিডিও থাকাকালীন জামনা পঞ্চায়েত এলাকায় ২৪০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। সেইসব গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়েই গড়ে ওঠে জামনা নিত্য সংঘ। জীবনবাবুর সহযোগিতায় ওই গোষ্ঠীগুলির সদস্যরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রকল্প থেকে আর্থিক স্বনির্ভরতার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁরাই এবার গণ ভাইফোঁটার আয়োজন করেন।

Advertisement

বছর খানেক আগে জীবনবাবু বাঁকুড়ায় ১০০দিনের কাজের প্রকল্পে জেলা নোডাল অফিসার হিসাবে যোগ দেন। কিন্তু তাঁর অবদানের কথা মনে রেখেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ভাইফোঁটায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান তাঁকে। জীবনবাবুও সেই আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারেননি। সব কাজ ফেলে রেখে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন। ভাইফোঁটায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বোনেদের কাছ থেকে উপহার পাওয়ার পর সবাইকে মিষ্টি খাওয়ান তিনি। অনুষ্ঠান শেষে আপ্লুত সুরজ আলি, ফুরাট বিবি, ইসলিম বিবিরা বলেন, ‘‘ভাইফোঁটা আমাদের কাছে একদম নতুন। শোনার পর থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম। অন্যরকম একটা অনুভূতি হল।’’

প্রাক্তন বিডিওকে ফোঁটা দিয়ে এলাকার সীমা চৌধুরী, জ্যোৎস্না চৌধুরীরা বলেন, ‘‘আমাদের নিজের কোনও ভাই নেই। তাই ভাইফোঁটা দেওয়া হয় না। ভাইফোঁটার দিনটাতে আমাদের খুব আক্ষেপ হতো। এবারে সেই আক্ষেপটা ঘুচল।’’

এদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন লাভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছবি পাল। জীবনবাবু বিডিও থাকাকালীন ছবিদেবী জামনা পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির প্রতি জীবনবাবুর অবদানের কথা স্মৃতিচারণ করেন তিনি।

জীবনবাবু নিজেও ভাবতে পারেননি এই আন্তরিক আয়োজন তাঁকে ঘিরে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও অজানা কারণে আমাদের পরিবারেও ভাইফোঁটার চল নেই। তাই ভাইফোঁটা নেওয়া হয় না। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বোনেরা আমাকে সেই সুযোগটা করে দেওয়ায় আমি অভিভূত। আজীবন এই দিনটি মনে থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন