‘ধর্ষণের চেষ্টা’, গ্রেফতার ব্রজ

হুমকি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে তৃণমূলের সোনামুখী এলাকার প্রাক্তন নেতা ব্রজ অধিকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

সোনামুখী শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৯
Share:

বিষ্ণুপুর আদালতে। নিজস্ব চিত্র

হুমকি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে তৃণমূলের সোনামুখী এলাকার প্রাক্তন নেতা ব্রজ অধিকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস জানান, বৃহস্পতিবার সোনামুখী থানায় দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রাতেই ব্রজকে ধরা হয়েছে। শুক্রবার বিষ্ণুপুর আদালতে তাঁর তিন দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে বলে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী অভিজিৎ দে। অভিযুক্তের আইনজীবী শঙ্খজিৎ রায় বলেন, ‘‘আমার মক্কেল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আইনি পথে লড়াই হবে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রজর বিরুদ্ধে অভিযোগটি দায়ের করেছেন এক বধূ। তাঁর অভিযোগ, ২০১৩ সালের ২২ জুন ব্রজ ও আরও কয়েক জন প্রথম বার তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সোনামুখী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। এসডিপিও জানিয়েছেন, ওই মামলায় জামিনে মুক্ত ছিলেন ব্রজ। বধূর অভিযোগ, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ১৬ অক্টোবর ভগবানপুরের স্ট্যান্ডে তিনি যখন বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন, মোটরবাইকে হাজির হন ব্রজ। অভিযোগ, তাঁকে মারধর করে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। ওই বধূ দাবি করেছেন, এ যাত্রা বাস চলে আসায় রক্ষা পান।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান বলছেন, ‘‘ব্রজ অধিকারী কোনও দিনই আমাদের দলের কোনও পদে ছিলেন না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই ওঁর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ আর বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ দাবি করছেন, কিছু দিনের মধ্যেই ব্রজর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘শাসকদল পুলিশকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করল।’’

Advertisement

এসডিপিও-র দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরেই ব্রজর বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। পাওয়া যায়নি। খবর আসে, রাতের ট্রেনে তিনি বিষ্ণুপুরে আসছেন। স্টেশন থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ব্রজর দাদা অজয় অধিকারী অভিযোগ করেছেন, গ্রেফতার করার সময়ে পরিজনদেরও হেনস্থা করে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘‘ভাইয়ের হাত ধরে উঠে এসে এখন অনেকেই ওকে ভুলেছে।’’ সোনামুখীর পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ব্রজ সচেতনতার সঙ্গে কোনও দিনই দল করেননি। সাধারণ কর্মী ছিলেন। ইদানীং বসেও গিয়েছিলেন।’’

দলের সঙ্গে ব্রজর টানাপড়েন পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বেই সামনে আসে। তৃণমূলেরই একাংশ তাঁর মনোনয়নে বাধা দিচ্ছেন অভিযোগে অনুগামীদের নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন তিনি। শেষে তাঁর মনোনয়ন জমা পড়েনি। কিছু দিন ধরে তাঁকে গেরুয়া শিবিরের কর্মসূচিতে দেখতে পাচ্ছিলেন কেউ কেউ। অজয় বলেন, ‘‘মহালয়ায় আরএসএস-এর পদযাত্রায় হেঁটেছিল। তার পরেই ওর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।’’

এই পরিস্থিতে ব্রজর গ্রেফতারি এবং তার পরে বিজেপির তরফে আসা বক্তব্য জল্পনা আরও উস্কে দিচ্ছে জেলার রাজনীতিতে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন