পিতৃগৃহে: বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পৈতৃক বাড়ির দুর্গাদালানে। নিজস্ব চিত্র
পুজোর খুশির সঙ্গে মিশে গেল ঘরের ছেলে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উপাচার্য হওয়ার আনন্দও।
সোমবার রাতেই সিউড়ি শহর ঘেঁষা কেন্দুয়া গ্রামের চক্রবর্তী পরিবার জেনে গিয়েছিল পরিবারের সন্তান বিশ্বভারতীর উপাচার্যের দায়িত্বে আসতে চলেছেন। সেই খবর জানা থেকে আনন্দে ভাসছে পরিবার। বিদ্যুৎবাবুর ছোট কাকা স্বদেশ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘বিদ্যুৎ এখন জার্মানিতে। আমার সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি। কিন্তু, বিশ্বভারতীর উপাচার্য হওয়ার খবর পেয়ে আত্মীয়দের ফোন শুরু হয়েছে।’’ কাকিমা অদিতি চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘পরিবারের কেউ রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হল। এটা পরিবারের কাছে অত্যন্ত গর্বের।”
এমনিতে এলাকায় নাম-ডাক রয়েছে চক্রবর্তী পরিবারের পুজোর। নতুন রংয়ের প্রলেপ দুর্গামণ্ডপে। অপেক্ষা শুধু দেবীর ডাকের সাজে সেজে ওঠার। সব মিলিয়ে পরিবারের শতাব্দীপ্রাচীন দুর্গাপুজো ঘিরে তৎপরতা তুঙ্গে। সেই খুশির আমেজেই মিশে গিয়েছে পদপ্রাপ্তির খবর। দুর্গামণ্ডপে দাঁড়িয়ে মেজকাকু ঘনশ্যাম চক্রবর্তী যোগ করলেন, ‘‘দাদা (বিদ্যুৎবাবুর বাবা কমলাকান্ত চক্রবর্তী) বেঁচে থাকলে খুব আনন্দ পেতেন। ওই দুঃখই রয়ে গেল!’’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিদ্যুৎবাবুকে স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হল, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে এ কথা সোমবার রাতেই জানিয়ে দেওয়া হয় অস্থায়ী উপাচার্য সবুজকলি সেনকে। পরিবার সূত্রে জানা গেল, কমলাকান্ত চক্রবর্তী বীরভূম জেলা স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। কিছু দিনের জন্য হলেও জেলাস্কুলেই পড়াশোনা করেছেন বিদ্যুৎবাবু। তার পরে বাবার বদলির সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে ঘুরে পড়াশোনা করতে হয়েছে। ছোটকাকু স্বদেশবাবু বলছেন, ‘‘ছেলেবেলা থেকেই দেখছি ওর কী অসম্ভব মেধা। প্রেসিডেন্সি কলেজে স্নাতক ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়। গেজেটে নাম বেরিয়েছিল। বহু
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছে। ভাল লাগছে এ বার একেবারে ঘরের কাছে এল।’’
বিদ্যুৎবাবুর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে সিউড়ি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়দের পরিবারের। পার্থসারথিবাবু বলছেন, ‘‘বিদ্যুৎ’দা এখন জার্মানিতে আছেন। উপাচার্য হওয়ার খবর পেলেও এখনও হাতে কেন্দ্রীয় সরকারের চিঠি পাননি। সেটা পেলে কাজ মিটিয়ে বিশ্বভারতীতে যোগ দেবেন।’’