এ বার দ্বারকেশ্বর নদের উপরে আড়ালবাঁশি এলাকায় ভেঙেছে।—নিজস্ব চিত্র
ফের বানের জলের তোড়ে ভেঙে গেল দ্বারকেশ্বরের উপর গড়া আরও একটি কজওয়ের রাস্তা।
বাঁকুড়া ১ ব্লকের আড়ালবাঁশী সংলগ্ন ওই কজওয়ের একাংশ ভেঙে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন নদীর দু’পাড়ের বাসিন্দারা। কিছু দিন আগেই দ্বারকেশ্বর নদে ভাদুল- সুর্পানগর কজওয়ে যাওয়ার রাস্তাও একই ভাবে জলের তোড়ে ভেসে যায়। ভাদুল–সুর্পানগর কজওয়েটি প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে গড়া হয়েছিল। আড়ালবাঁশী সংলগ্ন গ্রামের কজওয়েটিও গড়া হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে। কয়েক মাস আগেই সেটি চালু করা হয়েছিল।
প্রথম বর্ষাতেই কজওয়ের রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে গ্রামবাসীর মধ্যে। তাঁরা জানান, নদীর আড়ালবাঁশি সংলগ্ন প্রায় কুড়িটি গ্রামের মানুষ এ পাড়ে মীনাপুর শ্মশানঘাট হয়ে বাঁকুড়া শহরে নিয়মিত যাতায়াত করেন। কিন্তু বর্ষায় নদীতে জল থাকায় তাঁদের সমস্যা হয়। তাই দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় নদী পারাপারের জন্য একটি সেতুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা। কজওয়ে তৈরির কাজ শুরু হওয়ায় তাঁরা সমস্যা মিটবে বলে আশা করেছিলেন। মাসখানেক আগে তা চালু হয়। কিন্তু ক’দিনের বৃষ্টিতে ভরা দ্বারকেশ্বরের জলের বেগ সহ্য করতে পারেনি কজওয়ের রাস্তা। ভেঙে পড়েছে। ফলে ফের জল পেরিয়েই তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে।
যদিও জেলা সেচ দফতর অবশ্য ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি কজওয়ের রাস্তা দ্রুত মেরামতি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অশ্বনীকুমার মণ্ডলের দাবি, ‘‘কজওয়েগুলি ভাঙেনি। ক্ষতি হয়েছে কজওয়ের সঙ্গে পাড়ের সংযোগরক্ষাকারী রাস্তার।’’ তিনি জানান, সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে সংযোগকারী ওই রাস্তা গড়া হয়েছে বালির উপর সিমেন্টের স্ল্যাব বসিয়ে। বর্ষায় বানের জলের তোড়ে যাতে মূল কজওয়েটি অক্ষত থাকে তার জন্য পরিকল্পনা করেই রাস্তায় বালির উপর স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “বানের জলের বেগে বালি সরে গিয়ে স্ল্যাবগুলি সরে গিয়েছে। এতে নদীর জল ওই অংশ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ফলে মূল কজওয়েটি অক্ষত রয়েছে।’’ তিনি জানান, নদীর জল একটু নেমে গেলেই ওই স্ল্যাবগুলি ফের যেমন ছিল সেই মতো তাঁরা বসিয়ে রাস্তা তৈরি করে দেবেন। এতে আলাদা করে কোনও খরচ হবে না।
আড়ালবাঁশি সংলগ্ন ওই কজওয়েটি ধরে নিয়মিত বাঁকুড়া শহরে যাতায়াত করেন ধলডাঙা এলাকার বাসিন্দা বিমল গোপ। তিনি বলেন, “কজওয়ে বর্ষায় ডুববে এটা আমরা জানি। কিন্তু বর্ষা চলে যাওয়ার পরে ফের কজওয়েটি চালু যাতে থাকে সেই দিকে প্রশাসনের নজর রাখা দরকার।”