অচেনা ফোনে ডেবিট কার্ডের নম্বর বা আধার কার্ডের নম্বর জানতে চাওয়া, সঙ্গে কথার ফাঁকে অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া— এই ফাঁদে পড়েই প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা খোয়ালেন সাঁইথিয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুদিখানার দোকানদার বিদ্যুৎদাস চৌধুরী। ওই ব্যবসায়ী জানান, ব্যাঙ্কের নাম করে আধার লিঙ্ক যোগ করার জন্য প্রথমে ফোন করে চাওয়া হয় আধার কার্ড এবং এটিএম কার্ডের নম্বর। সেই সময় আধার কার্ডের নম্বর বলতে পারলেও এটিএম কার্ডের নম্বর বলতে পারেননি। অগত্যা ফোনের অপর প্রান্তের নির্দেশ মতো কিছু সময় পরে নিজের এটিএম কার্ডের নম্বর এসএমএস করে পাঠান ওই মুদি দোকানদার। তারপরই দফায় দফায় পাশবই থেকে ৫০ হাজার টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
বিদ্যুৎবাবু বলেন, ‘‘বারবার পাশবইয়ের সঙ্গে আধার লিঙ্ক যোগ করার কথা বলা হচ্ছে। সেই ভেবে নম্বর দিয়েছিলাম। কিন্তু দফায় দফায় টাকা তোলার ম্যাসেজ ফোনে আসার পরই বুঝতে পারি প্রতারিত হয়েছি। কার্ড লক করতে করতেই ৫০ হাজার টাকা লোপাট হয়ে যায়।’’ কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন, ব্যাঙ্ক বা বেসরকারি নানা সংস্থা বারবার গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে চেয়ে শিবির করছে, তারপরেও আকছার এমন প্রতারণা ঘটছে কেন? তা হলে কী সচেতনতার বার্তা তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না? ওই ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এ ভাবে যে প্রতারণা করা হতে পারে ভাবিনি।’’ মাসখানেক আগে একই পদ্ধতিতে মুলুটির এক মিষ্টি বিক্রেতার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকেও বেশ কয়েক হাজার টাকা খোওয়া গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই ধরনের ঘটনার দায় নিতে চাননি। ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, এই ধরনের প্রতারণা চক্রের পাল্লায় পড়ে অতীতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের হাজার-হাজার গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তেমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য গ্রাহকদের মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে গোপন তথ্য কাউকে না দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ব্যাঙ্ক, এটিএম কাউন্টারে লিখিত ভাবে গ্রাহকদের বিষয়টি জানানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ওই আধিকারিক বলেন, “আমরা খুবই দুঃখিত যে এর পরেও অনেকে এমন ভুল করছেন ও তার খেসারত দিচ্ছেন। আমরা সব সময় গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে বদ্ধপরিকর। আমাদের তরফ থেকে পুলিশকে যথাযথ সহযোগিতা করা হবে।”