সব ভুললেও জিততে চায় সুদীপা

এমন অসুখ নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য যেটুকু বাড়তি সুবিধা তার পাওয়ার কথা ছিল, কোনও কারণে পরীক্ষার প্রথম দিনে তা পায়নি সুদীপা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:৪০
Share:

লড়াকু: বাবার সঙ্গে সুদীপা দাস। বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র

এ এক অন্য লড়াইয়ের গল্প।

Advertisement

মাধ্যমিকের ময়দানে।

মানসিক ও শারিরীক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়ে এক মেয়ের এগিয়ে যাওয়ার কাহিনি।

Advertisement

ডাক্তারি পরিভাষায় সেই রোগের নাম ‘ডাউন সিনড্রোম’। শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে তা ভুলেই পরীক্ষায় বসেছে বোলপুরের লায়েক বাজারের সুদীপা দাস।

জন্ম থেকেই সেই রোগে আক্রান্ত সুদীপা। কথা জড়িয়ে যায়। হাতের লেখাও স্পষ্ট নয়। মাঝেমধ্যেই সব ভুলে যায় সে। পরিজনেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলছে। চলছে ফিজিওথেরাপি। প্রতিকূলতা কাটিয়ে মনের জোরেই এ বার মাধ্যমিক দিচ্ছে পারুলডাঙা শিক্ষানিকেতন আশ্রমকন্যা বিদ্যালয়ের সুদীপা।

এমন অসুখ নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য যেটুকু বাড়তি সুবিধা তার পাওয়ার কথা ছিল, কোনও কারণে পরীক্ষার প্রথম দিনে তা সে পায়নি। সেই খবর পান জেলা মাধ্যমিক পরিদর্শক প্রলয় নায়েক। পর্ষদ ও স্কুল সূত্রে খবর, পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন থেকেই সুদীপাকে আলাদা ঘরে বসে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন প্রলয়বাবু। শুক্রবারের পরীক্ষার পরে হাসিমুখে বেরিয়ে এল সুদীপা।

পরীক্ষা কেমন হল? প্রশ্নে এক মুখ হেসে জড়ানো গলায় বলল, ‘‘ভাল হয়েছে। সব প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পেরেছি।’’ বাবা স্বপনকুমার দাস মেয়েকে বুকে জড়িয়ে বললেন, ‘‘মেয়ের লড়াই আজ আমাদেরও লড়াই হয়ে উঠেছে। সব প্রতিকূলতা জয় করে ও মাধ্যমিক দিচ্ছে, এটাই আমাদের কাছে সব থেকে পাওনা।’’

প্রলয়বাবু বলেন, ‘‘প্রথম দিন সুদীপার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করতে পারেনি পরীক্ষাকেন্দ্র। পরের দিনেই পর্ষদের সঙ্গে কথা বলে সেই ব্যবস্থা করেছি। পরীক্ষা দিতে তার যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই দিকটিও স্কুলকে দেখতে বলা হয়েছে।’’

আর সুদীপা বলে, ‘‘যা-ই হোক না কেন, আমি জিতবই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন