কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বীরভূমের সাত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে পুরস্কৃত করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
আগামী ২১ ডিসেম্বর কলকাতার সল্টলেকে ওই কর্মীদের সম্মান জানানো হবে। ২০১৪–’১৫ আর্থিক বর্ষে কর্মদক্ষতার বিচারে বীরভূম থেকে নলহাটি ২ ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রাজিদা খাতুন, বর্ণালী বন্দ্যোপাধ্যায়, কণিকা সর্দার, বন্দনা রায়, হাসমোতারা খাতুন, রামপুরহাট ২ ব্লকের সৈয়দ ইসমাতারা এবং সিউড়ি ২ ব্লকের প্রতিমা চৌধুরী ওই পুরস্কার পাচ্ছেন।
সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক অরিন্দম ভাদুরি বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে ৭১ জনকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে আমাদের সাত কর্মীও রয়েছেন। এটা খুবই গর্বের বিষয়। পাশাপাশি আমাদের বাকি কর্মীদের মধ্যেও খুবই উৎসাহ জোগাবে।’’ সাত জনের মধ্যে পাঁচ কর্মীই নলহাটি ২ ব্লকের। সে দিকে খেয়াল করিয়ে প্রকল্পের নলহাটি ২ ব্লকের আধিকারিক অরিন্দম মণ্ডল বলছেন, ‘‘কৃতিত্বটা কর্মী এবং সুপারভাইজার, দু’পক্ষেরই। সুপারভাইজারেরা কর্মীদের ঠিক মতো পরিচালনা করেছেন। কর্মীরা সততা ও মন দিয়ে কাজ করার জন্য এই পুরস্কার পাচ্ছেন।’’ ওই সাত কর্মীর এই পুরস্কার প্রাপ্তির প্রশংসা করেছেন এসডিও (রামপুরহাট) সুপ্রিয় দাসও।
প্রশাসন সূত্রের খবর, যাঁরা পুরস্কার পাচ্ছেন, তাঁদের কেউ ১৯৯৬ সাল থেকে কেউ-বা ২০১০ সাল থেকে এই প্রকল্পে কাজ করছেন। প্রকল্পের নলহাটি ২ ব্লকের সুপারভাইজার সুমিতা সিংহ বলেন, ‘‘প্রত্যেক কর্মীকে শিশুর পুষ্টি হার বৃদ্ধির দিকে নজর রাখতে হয়। এলাকার অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতিদের পাশাপাশি শূন্য থেকে ৬ বছরের শিশুদের পরিপূরক খাবার প্রদান করতে হয়। এ ছাড়াও শিশুদের প্রি-স্কুলশিক্ষাও প্রদান করতে হয়।’’ পাশাপাশি এলাকায় প্রতিষেধক টিকা প্রদান, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিশুপাচার হচ্ছে কিনা— এমন নানা রকম সামাজিক দিকেও নজর রাখতে হয় অঙ্গনওয়াড়িকর্মীদের। এই সমস্ত দিকের অবদানকে দেখেই বীরভূম থেকে ওই সাত জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন নলহাটি ২ ব্লকের ৩৭ নম্বর সেন্টার বাঁকার পাহাড়ের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বর্ণালী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘২০০৭ সাল থেকে কাজ করছি। সংখ্যালঘু এলাকায় অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতিদের পরিপূরক খাবার প্রদান থেকে শিশুদের প্রতিষেধক প্রদান, প্রি-স্কুলশিক্ষা দানের ক্ষেত্রে অনেক ভাবে বোঝাতে হয়েছে। সেই কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছি জেনে ভাল লাগছে।’’ আবার সেই ১৯৯৬ সাল থেকে নলহাটির গোপালচকে কাজ করছেন রাজিদা খাতুন। সরকার সেই কাজের স্বীকৃতি দেওয়ায় খুশি তিনিও। পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় থাকা কর্মীরা বলছেন, ‘‘প্রকল্প আধিকারিক এবং সুপারভাইজারদের সহযোগিতায় এই সাফল্য মিলেছে।’’