নিজের বাগানে রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
পাশের জেলা বাঁকুড়ায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা আলফানসো ফলিয়ে বাহবা কুড়িয়েছেন। গত বছর রাজ্যস্তরের এক প্রতিযোগিতায় সেই আম সেরার শিরোপাও পেয়েছে। এ বার পুরুলিয়াতেও ফলল আমের অন্যতম সেরা জাত হিসেবে পরিচিত রসালো আলফানসো।
জেলা কৃষি দফতরের অবসরপ্রাপ্ত এগ্রিকালচার সুপারভাইজর রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায় মল্লিকা, হিমসাগর, চৌসা, ল্যাংড়া— টানা আট বছর ধরে নানা কুলীন আম চাষের পরে এ বারই প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে আলফানসো চাষ করেন। তার স্বাদ-গন্ধ এবং রং আসল আলফানসোর মতোই হয়েছে বলে দাবি রঞ্জিতবাবুর। রঘুনাথপুর ১ ব্লকের শিমূলকুদি গ্রামের এই কৃষিকর্তা পরীক্ষায় উতরে গিয়েছেন বলে দাবি করেছে পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতরও।
পুরুলিয়ায় আলফানসোর মতো উন্নত প্রজাতির আম চাষের নজির কার্যত নেই। কৃষি দফতরের প্রাক্তন এগ্রিকালচার সুপারভাইজার রঞ্জিতবাবু অবশ্য মনে করেন রুখা মাটির এই জেলাতেও ভাল ভাবেই আলফানসো আমের চাষ সম্ভব। আর এই বিশ্বাস থেকেই তিনি শিমূলকুদি গ্রামে নিজের বাড়িতে চার বছর আগে গোটা চারেক আলফানসো আমের চারা লাগিয়েছিলেন। পরপর তিন বছর গাছে মুকুল এলেও ফলনটা নেননি তিনি। কেন? তাঁর যুক্তি, ‘‘প্রথম তিন বছর গাছ থেকে ফলন নিলে গাছের স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই তিন বছর গাছগুলিতে মুকুল এলেও তা নষ্ট করে দিয়েছিলাম।’’
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রঘুনাথপুরের উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক তামসী কোলে। উৎসাহিত হয়ে তিনি যোগ করছেন, ‘‘আমরাও ওই আলফানসো চাষ করতে চাইছি। দফতরগত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের কিছু চাষিকে আলফানসোর চারা দেওয়া হবে। সেই তালিকায় রঞ্জিতবাবুও রয়েছেন।”
রঞ্জিতবাবু এ বার ২০টি আলফানসো গাছের চারা লাগাতে চান। তিনি মনে করেন, পুরুলিয়ায় বিকল্প চাষ হিসাবে আমের যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে। অভিজ্ঞতার নিরিখেই তাঁর পরামর্শ, চারা লাগানোর পরে প্রথম বছরের মে-জুন এই দুই মাস জল দিয়ে চারাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলেই হল। পরে আর বেশি জলের প্রয়োজন হয় না।