নিয়ন্ত্রণ: বিসরির পথে বসল গার্ড রেল। নিজস্ব চিত্র
পর পর চার দিনে চারটি দুর্ঘটনা। আর তার পর থেকেই মানবাজারের বিসরি এলাকায় রাস্তার বিপজ্জনক বাঁকে গাড়ি নিয়ে যেতে অনেকেরই বুক কাঁপছে। তটস্থ পুলিশও। তাই ওই বাঁকের আগে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বসানো হল গার্ড রেল।
গত ১৫ এপ্রিল বান্দোয়ান থেকে একটি মোটরবাইকে তিন বন্ধু মানবাজার আসছিলেন। বিসরি গ্রামের ওই বাঁকে হঠাৎ বেসামাল হয়ে তাঁরা গাড়ি থেকে ছিটকে পড়েন। দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। অন্য দুই আরোহী এখনও চিকিৎসাধীন। ১৬ এপ্রিল এবং ১৭ এপ্রিল ঠিক ওই জায়গাতেই ফের মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। দু’জন দুর্ঘটনায় জখম হন। দু’জনেরই চোট গুরুতর। ১৮ এপ্রিল একটি মোটরবাইক আরোহী দুর্ঘটনায় পড়েন। তবে তাঁর আঘাত তেমন গুরুতর নয়।
পুলিশ জানাচ্ছে, পরিসংখ্যানের নিরিখে ওই জায়গায় দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। মানবাজারের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী কয়েক মাস আগে ওই জায়গায় দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। কয়েক বছর আগে বান্দোয়ান থেকে বর্ধমানগামী একটি দুরপাল্লার বেসরকারি বাসের সঙ্গে একটি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল। বহু যাত্রী আহত হয়েছিলেন। মাঝে মধ্যেই ওই বাঁকে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে।
বিসরি গ্রামের বাসিন্দা অনন্তলাল মাহাতো, গৌতম মাহাতো, বংশী প্রামাণিক বলেন, ‘‘ওই বাঁকে এত দুর্ঘটনা হয় যে গ্রামের ছেলেরা কাজের ফাঁকে ও দিকে নজর রাখে। অনেক সময় দেখা গিয়েছে, মোটকবাইক উল্টে সওয়ারিরা অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তখন জলের বোতল, হাতপাখা নিয়ে দৌড়ে যেতে হয়। চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দিতে হয়। ইদানীং কেন জানি না দুর্ঘটনা বেড়ে গিয়েছে।’’
কী কারণে এত দুর্ঘটনা? রাস্তা তৈরির সময়ে প্রযুক্তিগত কোনও ত্রুটি রয়েছে?
মানবাজারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পূর্ত বিভাগ (সড়ক ) মহম্মদ মইনুদ্দিন ওই জায়গায় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বান্দোয়ান থেকে মানবাজারের দিকে ওই রাস্তায় তেমন বাঁক নেই। ফলে অধিকাংশ গাড়ি বেশ গতিতে থাকে। বিসরি গ্রামের কাছে একটি ‘দ’ আকারের বাঁক রয়েছে। ওই বাঁকের মুখে গতি কমাতে না পেরে বেশিরভাগ গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ছে।’’ পুলিশের একাংশ জানাচ্ছেন, নেশা করে গাড়ি চালানোও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।
এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার বলেন, ‘‘গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় গার্ডরেল বসানো হয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্ক বেশি রয়েছে, এ রকম আরও কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করে গার্ডরেল বসানো হবে। সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচির প্রচারও চালিয়ে যাওয়া হবে।’’