স্কুলের শিক্ষকরা আর তাঁদের বেতন থেকে বিদ্যুৎ বিলের টাকা পরিশোধ করবেন না। এর জন্য দিন দশেক থেকে স্কুলের বিদ্যুতের সংযোগ নিজেরাই কেটে দিয়েছেন। গরমে শিক্ষকদের সঙ্গে পড়ুয়ারাও কষ্ট পাচ্ছেন। সোমবার অভিভাবকেরা এবং এলাকার বাসিন্দারা আপত্তি জানালেও স্কুলের শিক্ষকরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। তাঁরা বিদ্যুৎ সংযোগ করেননি। ঘটনাটি রামপুরহাট থানার আয়াষ পূর্বপল্লি হামেদিয়া জুনিয়র হামেদিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের। প্রধানশিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘‘ফ্যান, লাইট, পাম্পের জন্য বিদ্যুৎ বিল তিন মাসে গড়ে ১১০০ টাকা হয়। আলাদা করে সেই বিলের টাকা সরকার থেকে পাওয়া যায় না। স্কুলের শিক্ষকদের বেতন অনিয়মিত এবং স্বল্প হওয়ার জন্য শিক্ষকরা আর তাঁদের বেতন থেকে বিদ্যুৎ বিল মেটাতে চাইছে না।”
সমস্যা কেবল বিদ্যুতের নয়, জলেরও। স্কুলের ভিতর একটিমাত্র সরকারি নলকূপ। সেটিও এক বছরের বেশি দিন বিকল। ফলে স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্না করার জন্য রাঁধুনীরা সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদেরকে বাইরে থেকে রান্না করার জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সমস্যায় পড়েছেন পড়ুয়ারা। প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুলের নলকূপ এক বছরের বেশি খারাপ। বিডিও অফিসে জানিয়েও কাজ হয়নি। স্কুলে বিদ্যুৎ চালিত পাম্প আছে। কিন্তু বিদ্যুৎই নেই, ফলে পাম্প থেকেও না থাকা!’’
এত দিন কীভাবে চলল?
জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর থেকে স্কুলটি পরিচালিত হয়। স্কুল সূত্রে খবর, এতদিন শিক্ষক , শিক্ষা কর্মীরা মিলিত ভাবে বিদ্যুতের বিল দিয়ে এসেছে। কিন্তু এখন আর কেউ রাজি হচ্ছে না। যার জন্য বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে এলাকার তিনটি স্ব নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যরা মিড-ডে মিল রান্না করে। একটি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর দলনেত্রীর অভিযোগ, স্কুলে নলকূপ খারাপ। বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রান্না করার জন্য বাইরে থেকে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ‘‘বেতন থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিদ্যুৎ বিল মেটানোর জন্য টাকা চেয়েছিলেন। তা দিতে রাজী না হওয়ার জন্য পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।’’
যদিও প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘এলাকার একজন বাসিন্দা নিজেকে কংগ্রেস নেতা দাবি করে এই সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’ সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের জেলা আধিকারিক ফায়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘বাইরে আছি। পরে খোঁজ নেব।’’ রামপুরহাট মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট বিডিও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলব।’’