হকারদের বাধা, তাণ্ডব রেল স্টেশনে

প্রায় মিনিট পনেরো ধরে বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়ায় ছাতনা স্টেশনে। বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরের হাত থেকে বাঁচতে রেল কর্মীরা অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়েন। এই ঘটনায় অবশ্য ট্রেন চলাচলে কোনও বিঘ্ন হয়নি বলেই জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার। গোটা ঘটনাটি নিয়ে রেল পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ছাতনা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০০:১৩
Share:

সাফাই: ভাঙা রেলিং। বৃহস্পতিবার চলছে সাফাই। নিজস্ব চিত্র

অসন্তোষ জমছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। যা চরম আকার নিল বুধবার রাতে। ট্রেনে উঠতে না পেরে হকারেরা কার্যত হামলা চালালেন ছাতনা স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে। ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে বাঁকুড়া জিআরপি, আরপিএফ ও ছাতনা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আদ্রা ডিভিশন ট্রেনে হকারদের ওঠা বন্ধ করতে বিশেষ তৎপর হয়েছে। ট্রেনে ওঠা তো দূর, হকারদের স্টেশনের আশপাশেও ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। বহু হকারকেই জরিমানা করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরপিএফ কর্মীদের নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল হকারদের মধ্যে। বুধবার রাতে ছাতনা স্টেশনে হলদিয়া থেকে আসানসোলগামী হলদিয়া এক্সপ্রেসে ওঠার সময়ে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। স্টেশনের প্রায় একশো জন হকার ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। উত্তেজিত অবস্থায় তাঁরা স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে যান। শুরু হয় বচসা। স্টেশন ম্যানেজারকে ভিতরে আটকে অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ছাতনার স্টেশন ম্যানেজার জীতেনকুমার বাগচীর কথায়, “এক দল লোক আমার অফিসে ঢুকে কেন হলদিয়ে এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে দিলাম সেই প্রশ্ন তোলেন। আমাকে ধাক্কা দিয়ে অফিসে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অফিস লক্ষ করে পাথর ছুঁড়তে থাকেন তাঁরা।” খবর পেয়েই আরপিএফ, জিআরপি ও ছাতনা থানার পুলিশ স্টেশনে যায়। পুলিশ দেখেই গা ঢাকা দেন বিক্ষোভকারীরা।

প্রায় মিনিট পনেরো ধরে বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়ায় ছাতনা স্টেশনে। বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরের হাত থেকে বাঁচতে রেল কর্মীরা অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়েন। এই ঘটনায় অবশ্য ট্রেন চলাচলে কোনও বিঘ্ন হয়নি বলেই জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার। গোটা ঘটনাটি নিয়ে রেল পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

এ দিন ছাতনা স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে ঢোকার মুখের এক পাশের রেলিং ভেঙে গিয়েছে। বাঁকুড়া জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় মামলা রুজু হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা যায়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের কিছু হকার বলেন, “ট্রেনে চা- মুড়ি বিক্রি করেই সংসার চালাই আমরা। রেল কর্তৃপক্ষের এই কড়াকড়িতে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর সুরাহাও করছে না রেল।”

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু হকারের সঙ্গে রেলের যে চুক্তি হয়ে ছিল তার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে চুক্তি নবীকরণ হয়নি। রেলের আদ্রা বিভাগের এক কর্তার কথায়, “অবৈধ ভাবে চলতে থাকা ব্যবসা বন্ধ করতেই আমরা তৎপর হয়েছি মাত্র।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন