অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে কিডনির রোগ হচ্ছে কি না, সেটা দেখতে রাজ্য সরকারের পরিবেশ দফতর থেকে প্রতিনিধিরা রামপুরহাট থানার পাইকপাড়া গ্রামে আসবেন। এমনটাই জানালেন এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষেরা যে পানীয় জল ব্যবহার করেন, সেই নলকূপের জল পরীক্ষা করা হয়েছে। জলে তেমন কোনও খারাপ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। সেই জন্য গ্রামের পরিবেশ সরেজমিনে দেখতে পরিবেশ দফতর থেকে বিশেষ প্রতিনিধি দল পাইকপাড়া গ্রামে খুব শীঘ্রই আসবেন।’’
কেন দীর্ঘ দিন থেকে কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা, সেই বিষয়টি দেখার জন্য সম্প্রতি তাঁরা মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মন্ত্রী গ্রামে গিয়ে আক্রান্ত এবং আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর নির্দেশে বাড়ি বাড়ি আক্রান্তদের এবং আক্রান্ত পরিবারের থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রতিনিধিরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানীয় জলের উৎস্য থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করেন।
আক্রান্ত রোগীদের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে রক্তের নানা পরীক্ষা করা হয়। তবে ইউএসজি পরীক্ষা এখনও হয়নি।
রামপুরহাট ১ এর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামানুজ সিংহ জানান, ১৬ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে থেকে গ্রামে কিডনি রোগে ‘আক্রান্ত’ ৪৮ জনের কাছ থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের নেফ্রোরলজি বিভাগের চিকিৎসকদের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ওই তালিকায় আক্রান্তরা কত দিন ধরে ভুগছেন, কোথায় চিকিৎসা করিয়েছেন, কী ধরনের উপসর্গ এই সমস্ত কিছুই সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে গ্রামে পানীয় জলের উৎস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ স্বপনকুমার ওঝা জানান, জলের নমুনা পরীক্ষা করে খুব একটা খারাপ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তার জন্য ঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না যে কী কারণে গ্রামে এই রোগ হচ্ছে। স্বপনবাবুর কথায়, ‘‘সল্টলেকের একটি সরকারি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বিজ্ঞানী অসীম সাহার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গ্রামে আগামী ১৯ মার্চ আসবেন। এ ছাড়া ইতিমধ্যে পাইকপাড়া গ্রাম সংলগ্ন খ্যাঁদামারা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন কমিনিউনিটি হেলথ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন এএনএমকে নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে পাইকপাড়া গ্রাম থেকে নিয়মিত রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।’’
এ দিকে গ্রামের বাসিন্দা দীপক ভকত অন্য যুবকদের দাবি, অবিলম্বে গ্রামে পরিশ্রুত পানীয় জল ব্যবস্থা চালু করা হোক।
গ্রামের রাস্তাঘাট সহ নিকাশি ব্যবস্থা আরও উন্নতির দাবিও তুলেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নির্মল বাংলা মিশন প্রকল্পে গ্রামের প্রতিটি ঘরে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয় নির্মাণের দাবিও উঠেছে। বিডিও (রামপুরহাট ১) দীপান্বিতা বর্মণ জানান, স্থানীয় নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ অন্য সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য সহ পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করে ওই গ্রামে বেশ কিছু পদক্ষেপ দ্রুত নেওয়া হবে।