উন্নয়ন চাইছে পোড়া পাহাড়

‘এমডিএ’-র সদস্য-সচিব রাজু মিশ্রর আশ্বাস, ‘‘মুকুটমণিপুর লাগোয়া সব আকর্ষণীয় জায়গাগুলিকে এমডিএ-র সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খাতড়া শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

দুই পাহাড়ের মাঝে টলটলে জলাশয়। চারপাশ মোড়া সবুজে। পাহাড়ের খাঁজে রয়েছে গুহাও। মুকুটমণিপুর লাগোয়া পোড়া পাহাড়কে ঘিরে তাই পর্যটন বিকাশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। এই এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ার দাবিতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘মুকুটমণিপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এমডিএ) ও স্থানীয় পঞ্চায়েতে আবেদন করেছেন। সরাসরি না হলেও মহকুমাশাসক (খাতড়া) তথা ‘এমডিএ’-র সদস্য-সচিব রাজু মিশ্রর আশ্বাস, ‘‘মুকুটমণিপুর লাগোয়া সব আকর্ষণীয় জায়গাগুলিকে এমডিএ-র সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে।’’

Advertisement

জল, জঙ্গল ও পাহাড়ে সাজানো দক্ষিণ বাঁকুড়ার সৌন্দর্য বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মুকুটমণিপুর সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে বরাবর। গত কয়েক বছরে মুকুটমণিপুরকে আরও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নজর দেওয়া হয়েছে এখানকার পরিবেশ রক্ষায়। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ‘এমডিএ’ গঠন করার পরে এই কাজে গতি এসেছে।

মুকুটমণিপুরের অবস্থান খাতড়া ব্লকের গোড়াবাড়ি পঞ্চায়েতে। ওই পঞ্চায়েতের আর এক সম্ভাবনাময় আকর্ষণীয় জায়গা আমডিহা, দামোদরপুর, ঝরিয়াকোচা এবং রক্তজড়িয়া মৌজা সংলগ্ন পোড়া পাহাড়। মুকুটমণিপুর থেকে সোজা পথে পোড়া পাহাড় মেরেকেটে চার কি পাঁচ কিলোমিটার। ঘুরপথেও ছ’কিলোমিটারের বেশি নয়।

Advertisement

অধিকাংশ পর্যটকের কাছে এই পাহাড়ের পরিচিতি তেমন নেই। অথচ, বাসিন্দাদের দাবি, কমবেশি ২০০ মিটার উচ্চতার পোড়া পাহাড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে শুশুনিয়ার থেকে কম নয়। পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হলে মুকুটমণিপুরে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা এখানে পাহাড়ে চড়া ও গুহা দেখার বাড়তি আনন্দ পাবেন।

খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত মহাপাত্র বলেন, ‘‘পাহাড়ের গায়ে উত্তর দিকে রয়েছে প্রাচীন গুহা। দু’টি পাহাড়ের মাঝখানে রয়েছে সুন্দর একটি জলাশয়, যা দেখলে পর্যটকদের মন ভরে যাবে।’’ বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পাহাড় পর্যন্ত পৌঁছনোর পাকা রাস্তা রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে পিকনিক করার মতো ছোটোখাটো পরিকাঠামো গড়ে দিয়ে প্রচার করলেই পর্যটকদের ভিড় টানবে পোড়া পাহাড়। সে জন্য পোড়া পাহাড়ের সঙ্গে ঘাঘরা জঙ্গল ও কংসাবতী রিভার ব্যাঙ্ককে ‘এমডিএ’-র সঙ্গে যুক্ত করারও দাবি তুলছেন সুব্রতবাবু। তাঁর দাবি, ২০১৭ সালে ‘এমডিএ’-র কাছে এ ব্যাপারে লিখিত জানানো হয়। সে সময় একটি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও দাবিপত্র তুলে দেওয়া হয়।

পোড়া পাহাড় সংলগ্ন দামোদরপুরের বাসিন্দা ধনঞ্জয় বাস্কে, বনকাটি গ্রামের তরুণ মহাপাত্র, কুঁড়েবাকড়া গ্রামের শ্যামল মাহাতোদের বক্তব্য, ‘‘এখানে পর্যটনের বিকাশ হলে আমডিহা, কুঁড়েবাকড়া, দামোদরপুর, তিলাবনি, বনকাটি, গোপীনাথপুর, ঝরিয়াকোচা রক্তজড়িয়ার মতো আট-দশটি গ্রামের অর্থনৈতিক বিকাশ হবে।’’ গোড়াবাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান ঝর্না বাউরি তাঁদের পাশে দাড়িয়ে দাবি করেন, ‘‘এই জায়গাগুলি সত্যিই পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উপযুক্ত। কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন