চাহিদা সাদা আবিরের, বিকোচ্ছে হলুদ শাড়িও

বোলপুর থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের পথে দেখা গেল হরেক রংয়ের আবির নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০০:১৪
Share:

সাতরঙা: বসন্ত উৎসবের আগে জমে উঠেছে রং, আবিরের বিকিকিনি। মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে। —নিজস্ব চিত্র।

রাত পোহালেই শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব। তার আগে বোলপুর থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের পথে দেখা গেল হরেক রংয়ের আবির নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

কোনও কোনও ব্যবসায়ী হয়তো বছরের অন্য সময় ফল বা আনাজ বিক্রি করেন, কেউ আবার আনকোরা নতুন। রাস্তার ধারে ভ্যান লাগিয়ে বিক্রি করছেন আবির। তবে এখন আবিরের তুলনায় মুখোশ, হরেক রংয়ের উইগ, পিচকিরির পরিমাণ বেশি। আবিরের রংয়ের রমকফেরও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এক এক জন ব্যবসায়ী ১৪-১৫টি রংয়ের আবির বিক্রি করছেন।

হরেক রকম রংয়ের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে সাদা আবিরও।

Advertisement

বিক্রেতারা জানান, আগে আবির পাওয়া যেত খুব বেশি হলে চার-পাঁচ রংয়ের। সবুজ, গোলাপি, হলুদ, লাল, কমলা— এমন রংয়ের আবিরই বিক্রি করতেন। এখন আকাশি, সাদা, বেগুনি, খয়েরি রং-ও জায়গা করে নিয়েছে। সবুজ, গোলাপির আবার তিন চারটে আলাদা আলাদা ধরণ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আবির ব্যবসায়ী রাজা সাউ, শিবা সাউ বসেছেন শান্তিনিকেতন রোডে। তাঁরা জানান, এ বার টিয়া রংয়ের আবির নিয়ে এসেছেন। মূলত কলকাতার বড়বাজার থেকে আবির কেনেন। আবিরের দাম আগের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। দোকানদারেরা জানান, ১০০ গ্রাম আবির বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। আগে থেকেই পরিমাণ অনুযায়ী প্যাকেটে আবির ভরে ১০ টাকা প্রতি প্যাকেটও বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, চাহিদা রয়েছে উইগেরও। বিভিন্ন রংয়ের এবং বিভিন্ন দামের ‘উইগ’ রয়েছে। পিচকিরিতে বদল এসেছে। পাওয়া যাচ্ছে কার্টুনের বিভিন্ন চরিত্র। সেগুলি বাচ্চাদের আকর্ষণ করছে। একইসঙ্গে মিলছে সিংহ, বাঘ, হনুমান বা রাক্ষসের মুখোশ। সেগুলির বিক্রিও নিতান্তই কম নয়।

বেলুড় থেকে এ বছর আবির নিয়ে এসেছেন সঞ্জু সাউ। একটি বাজি তৈরির সংস্থাও আবির বিক্রি শুরু করেছে। সঞ্জুবাবু জানালেন, আগের বছর ওই সংস্থার আবিরের বিজ্ঞাপন দোকানে লাগানো ছিল। তাতেই অনেকে খোঁজ করেছিলেন। তখনই তিনি ঠিক করেন ওই সংস্থার আবির দোকানে রাখবেন। ১২০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত দামের উইগও রেখেছেন তিনি।

শান্তিনিকেতনের স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এখানকার বসন্ত উৎসবের প্রকৃতির সঙ্গে উইগ, মুখোশ বেমানান। তাই পর্যটকেরা যাঁরা আসবেন, তাঁরা বাইরে সেগুলি পরতেই পারেন। কিন্তু আশ্রমমাঠে সে সব পরে ঢুকলে মানানসই হবে না।

বিক্রেতারা বলছেন, আবিরের চাহিদা রয়েছে। আগে আবির বরং কম বিক্রি হত। বেশি বিক্রি হত রং। ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘এখন মানুষ অনেক সচেতন। রং উঠতে বেশ কিছু দিন সময় লাগে। সে কারণেই হয়তো আবিরের চাহিদা বেড়েছে।’’

শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবে হলুদ রংয়ের শাড়ি পরার চল রয়েছে। তাই শহরের শাড়ির দোকানগুলিতে হলুদ শাড়ির পসরা জমেছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে কাপড়ের ফুল। শোভাযাত্রার নাচের জন্য লাঠিও বিক্রি হচ্ছে শান্তিনিকেতনের আনাচে-কানাচে। কোনওটি ৩০ টাকা, কোনওটি ৪০ টাকায় বিকোচ্ছে। রং সেই হলুদ-লাল বা হলুদ-সবুজ।

বিশ্বভারতীতেও এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সঙ্গীতভবনে রোজ চলছে অনুষ্ঠানের মহড়া। আশ্রমমাঠে তৈরি হতে শুরু করেছে মঞ্চ। আজ, বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় আশ্রমমাঠে ‘সুন্দর’ নাট্যগীতি পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে এ বছরের বসন্ত উৎসব। এর পরে রাত ন’টায় গৌরপ্রাঙ্গণে হবে বৈতালিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন