শীতের দোসর টানা ছুটি, ভিড় বোলপুরে

পারদ নামতে শুরু করলেই ভিড় জমে শান্তিনিকেতনে। তার মধ্যে যদি পর পর তিন দিনের ছুটি থাকে, ভিড়টা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ঠিক সে রকমই ছবি নজরে এল শুক্র-শনি, রবিবারের শান্তিনিকেতন সহ খোয়াইয়ের হাট সর্বত্র। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের সামনেও ছিল থিকথিকে ভিড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৪
Share:

খোয়াইয়ের হাটে ভিড়। নিজস্ব চিত্র

পারদ নামতে শুরু করলেই ভিড় জমে শান্তিনিকেতনে। তার মধ্যে যদি পর পর তিন দিনের ছুটি থাকে, ভিড়টা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ঠিক সে রকমই ছবি নজরে এল শুক্র-শনি, রবিবারের শান্তিনিকেতন সহ খোয়াইয়ের হাট সর্বত্র। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের সামনেও ছিল থিকথিকে ভিড়।

Advertisement

গুরুনানকের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ছিল। মাসের চতুর্থ শনিবার হওয়ায় ব্যাঙ্ক সহ বেশ কিছু বিভাগ বন্ধ ছিল। রবিবার তো সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে তিন দিনের ছুটি। তার পর আবার মাঝে শনিবার, তাই শান্তিনিকেতনের খোয়াই হাটের আকর্ষণ তো আছেই। এই সব কারণেই মেলার মতো ভিড় দেখল শান্তিনিকেতন। রবীন্দ্রভবন সূত্রে খবর, শনিবার দুই হাজার ১৭৩টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৮১০টি টিকিট বড়োদের জন্য এবং ৩৬৩টি টিকিট পড়ুয়াদের জন্য কিনেছেন পর্যটকেরা।

রবিবারও প্রায় এক হাজার ৫০০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। রবীন্দ্রভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে মার্চ মাস পর্যন্ত ভিড় থাকে বেশি। এপ্রিল ২০১৭ থেকে মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত রবীন্দ্রভবনের টিকিট বিক্রির সংখ্যা দুই লক্ষ তিন হাজার ২৯৭টি। এর মধ্যে পড়ুয়াদের জন্য টিকিট বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার ৬৫৮টি। গত অর্থবর্ষে রবীন্দ্রভবন দেখতে আসা বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ৫০২ জন। এ বছরও এই সময়ে পর্যটকদের ঢল নামবে, আশায় কর্তৃপক্ষ। এমনিতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে রবীন্দ্রভবনে। কেন্দ্রীয় সরকারি ছুটিগুলিতেও বন্ধ থাকে এই ভবন। তবে মেলার ছ’দিন যে বারই হোক না কেন রবীন্দ্রভবন খোলা থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

পর্যটকেরা শান্তিনিকেতনের আশ্রম ঘুরবেন অথচ খোয়াই যাবেন না, এমনটা সচরাচর হয় না। তাই এক দিকে যেমন রবীন্দ্রভবনে ভিড় ছিল, একই ভাবে ভিড় ছিল খোয়াইয়ে শনিবারের হাটেও। ভিড় সামলাতে তৎপর ছিল পুলিশ। এমনিতেই হাটের দিন ভিতরে যানবাহন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শালবনের মধ্যে গাড়ি রেখে হাটের ভিতরে ঢুকছেন পর্যটকেরা। তবে অনেক বয়স্ক মানুষের হাঁটার সমস্যা থাকে। তাঁদের কথা ভেবেই গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া ছ’টি টোটোকে হাটের ভিতরে চলার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শুধু ওই ছ’টি টোটোতে চেপেই হাটের ভিতরে যাওয়া যাবে।

আশায় বসে ব্যবসায়ীরাও। তোড়জোড় শুরু হয়েছে নিত্যনতুন জিনিস বানানোর। এর মধ্যেই হাট পরিষ্কার রাখতে প্রচার অভিযান চালাতে শুরু করেছে শান্তিনিকেতন পুলিশ। মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সঙ্গে যুক্ত বহুরূপী শিল্পীরা পরিবেশ রক্ষার পাঠ দিচ্ছেন। পেশায় স্কুলশিক্ষক এক পর্যটক বললেন, ‘‘শনিবারের ছুটিটা করিয়ে নিয়ে তিন দিনের ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে শান্তিনিকেতন এসেছি। ভেবেছিলাম এখনই এত ভিড় হবে না। কিন্তু বেশ ভালই লোকজন এসেছেন।’’ ব্যাঙ্ককর্মী সুদেব হালদারের কথায়, ‘‘টানা তিন দিনের ছুটিতে শান্তিনিকেতনের আকর্ষণে চলে এসেছি। সহকর্মীরাও সঙ্গে আছেন।’’ আর এক পর্যটকের বক্তব্য, ‘‘শনিবার যা ভিড় ছিল, হাটের ভিতরে ঢুকতেই পারিনি। তাই রবিবার এলাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement