Genital

জন্ম থেকে যোনিপথ নেই! রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে সফল অস্ত্রোপচার বীরভূমের হাসপাতালে

ডাক্তারি পরিভাষায় এই সমস্যার নাম ‘মেয়ার রকিট্যানস্কি কুষ্টার হাউসার সিন্ড্রোম’। এ ক্ষেত্রে রোগিণীর গর্ভাশয় প্রায় থাকে না বললেই চলে। যোনিপথও থাকে না। তবে ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলো থাকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৩ ২০:৩৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

জন্ম থেকেই যোনিপথ নেই। তাই নিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর নানা জায়গায় চিকিৎসার চেষ্টা করেছে বীরভূমের ইলামবাজার থানা এলাকার নাবালিকার পরিবার। মেয়েকে নিয়ে কখনও বাবা-মা ছুটে গিয়েছেন বর্ধমান, কখনও ছুটেছেন আসানসোল, কখনও কলকাতা। কিন্তু কোথায় সমস্যার সমাধান হয়নি। এমন সময় গ্রামেরই এক প্রতিবেশীর কাছে জানতে পারেন সিউড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালের কথা। তবে সুরাহার আশা না করেননি তাঁরা। কিন্তু অন্যান্য জায়গার মতো এ বার আশাহত হতে হল না। দীর্ঘ দু’মাসের চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাবালিকার যোনিপথ তৈরি হয়েছে। এই ‘অসাধ্য সাধন’ করেছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস দেবাংশী।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট বেসরাকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রায় দু’ মাস চিকিৎসা চলার পর জুন মাসেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল নাবালিকার। এর পর জুলাই মাসের শেষ দিকে ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। নানা জায়গায় ঘুরে শেষে জেলার হাসপাতালেই সফল অস্ত্রোপচারের পর খুশি নাবালিকার পরিবার। তাঁরা অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসক তথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নাবালিকার দিদি বলেন, ‘‘আমরা কোনও দিন ভাবিনি যে, বোন আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে। ভাবিনি, ওর কোনও দিন বিয়ে হবে। বোনের চিকিৎসার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছি। কিন্তু কোনও সুরাহা পাইনি। অবশেষে নিজের জেলাতেই বোনের সমস্যার সমাধান হল। ডাক্তারবাবুকে কী ভাবে যে ধন্যবাদ জানাব, তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’’

নাবালিকার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন যিনি, সেই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস দেবাংশীর কথায়, ‘‘ওই রোগী আমার কাছে ‘অ্যাবসেন্ট ভ্যাজাইনা’ ( ভ্যাজাইনাল অ্যাজেনেসিস) নিয়ে এসেছিল। ডাক্তারি পরিভাষায় এর নাম ‘মেয়ার রকিট্যানস্কি কুষ্টার হাউসার সিন্ড্রোম বা ‘এমআরকেএইচ সিন্ড্রোম’। প্রতি পাঁচ হাজার মহিলার মধ্যে এক জনের ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যায়। এই ক্ষেত্রে রোগিণীর যোনিপথও থাকে না। তবে ওভারি এবং ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলো থাকে। এই কারণেই রোগিণীর যোনিপথ তৈরি করতে ‘ম্যাকিন্ডোস’ অপারেশন করা হয়েছে।’’ চিকিৎসক আরও জানান, এই অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি রয়েছে। এই কারণে অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অপারেশন করতেও চান না। তাঁর এই অস্ত্রোপচার করতে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টা।

Advertisement

চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘প্রায় দেড় মাস আগে অপারেশন করেছিলাম। আজ (মঙ্গলবার) দেখলাম, ভ্যাজ়াইনার যে গভীরতা, সেটা প্রায় তিন ইঞ্চি মতো হয়েছে। তাই অপারেশনকে সফল বলছি। এই অপারেশনে রোগিণীর যৌনজীবন স্বাভাবিক হবে। কিন্তু নিজের গর্ভে সন্তান ধারণের সম্ভাবনা প্রায় নেই। তবে সারোগেসির মাধ্যমে মাতৃত্বের স্বাদ পেতে পারেন তিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন