সরব: বিষ্ণুপুরে মহকুমাশাসকের অফিস চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
আসন বাড়লেও ভর্তির সমস্যা মিটছে না রঘুনাথপুর কলেজে। স্নাতক স্তরের কলা বিভাগে অন্তত তিনশো ছাত্রছাত্রী এখনও এই কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই পড়ুয়াদের কলেজে ভর্তির দাবিতে সরব হয়েছেন কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ। সোমবার ওই দাবিতে অধ্যক্ষের কাছে তাঁরা স্মারকলিপি দিয়েছেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিলেও ছাত্র সংসদ দাবি করছে, দ্রুত কলেজে আসন সংখ্যা আরও বাড়িয়ে ভর্তির সমস্যা মেটানো হোক। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক চিরঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘স্নাতক স্তরের কলা বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তির আবেদন করার পরেও তিনশোর মতো ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারেনি। দ্রুত ভর্তি না করা গেলে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাবেন।’’
পুরুলিয়ার অন্যতম বড় কলেজ রঘুনাথপুরে ছাত্র ভর্তির সমস্যা বরাবরের। তাই গতবারের তুলনায় এ বার অনার্স ও পাস কোর্স মিলিয়ে প্রায় ২০০ আসন বাড়িয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে জেলা কলেজগুলিতে এই সমস্যা চলতে থাকায় এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রতিটি কলেজে অনেক বেশি করে আসন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল। ডিএসও-র পুরুলিয়ার সভাপতি স্বদেশপ্রিয় মাহাতো বলেন, ‘‘জেলায় কলেজগুলিতে যত সংখ্যক আসন আছে, তার থেকে অনেক বেশি ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হচ্ছে। সবাই যাতে কলেজে পড়ার সুযোগ পায়, তা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিশ্চিত করতে হবে।’’
টিএমসিপি পরিচালিত রঘুনাথপুরের ছাত্র সংসদও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সেই আসন বাড়ানোর ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানিয়েছেন। ছাত্র সংসদের ক্ষোভ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে পরিচালন সমিতিতে এখনও আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আসন সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানাতে টালবাহানা করছে।
যদিও ভর্তি সমস্যা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত বলেই পাল্টা দাবি করেছেন পরিচালন সমিতির সদস্য সুকুমার রায়। তিনি বলেন, ‘‘ভর্তি হতে না পারা ছাত্রছাত্রীরা সকলেই রঘুনাথপুর ১ ব্লক সহ পাশের পাড়া, সাঁতুড়ি ব্লকের বাসিন্দা। ওই সব এলাকায় কলেজ নেই। ফলে সবাই চাইছেন, রঘুনাথপুরে ভর্তি হতে। কর্তৃপক্ষের উচিত পরিচালন সমিতিতে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আসন সংখ্যা বাড়াতে দ্রুত আবেদন করা।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলা বিভাগের পাস কোর্সে ন্যূনতম ৪৮ শতাংশ নম্বর পাওয়া ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হওয়ার পরেই আসন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া পড়ুয়ারা কলা বিভাগের পাস কোর্সে আবেদন করেছেন।
ভর্তি সমস্যার হয়েছে বলে মানছেন কলেজের অধ্যক্ষ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ও। তিনি জানান, এ বছর আসন সংখ্যা কিছু বাড়লেও সব আবেদনকারী ভর্তি হতে পারেননি। বলেন,.‘‘স্থানীয় পড়ুয়ারা স্থানীয় কলেজেই ভর্তি হতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। আমরা ভর্তি হতে না পারা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সহানুভূতির সাথেই দেখছি। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আসন সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানানো হবে।”