এক সময় শীতের শুরুতে বাঁধের চারপাশে দেখা মিলত পরিযায়ী পাখিদের। এলাকার মানুষের চাষাবাদ-সহ দৈনন্দিন কাজের প্রয়োজনও মেটাত উখড়ার বড়গ্রামের শুকোবাঁধ। কিন্তু সেই বাঁধটিই দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় তার ৮০ শতাংশ এলাকা বুজে গিয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে বাঁধের জলও দূষিত হয়ে গিয়েছে বলে দাবি। ১৫ হাজার মানুষের বাস বড়গ্রামে। গ্রামের প্রধান সমস্যা পানীয় জল। বাসিন্দারা জানান, এলাকায় জানস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কল থাকলেও তা থেকে সপ্তাহে এক-দু’দিনের বেশি জল পড়ে না। এই অবস্থায় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই নির্ভর করতেন শুকোবাঁধের উপরে। কিন্তু বাঁধের অধিকাংশ এলাকা পানায় ভরে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয় না। এই পরিস্থিতিতে বছর তিনেক ধরে বাসিন্দাদের অনেককেই প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ময়রা এলাকা থেকে জল আনতে হয় বলে জানান পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান কালিয়া বাউরি।
এই বাঁধটি তৈরি করেন উখড়া জমিদার বাড়ির পূর্বপুরুষেরা। পরিবারের বর্তমান সদস্য শোভনলাল সিংহহাণ্ডা বলেন, “ ২০০৩-২০০৪ আর্থিক বর্ষে ৪৪ একরের এই বাঁধটি সংস্কার করে মাছ চাষের জন্য পঞ্চায়েতকে ব্যবহার করতে দিয়েছিলাম। কিন্তু পঞ্চায়েতকে দায়িত্ব দেওয়ার পরেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর পুকুরটি খাস ঘোষণা করে।’’ এরপরে বাঁধটির মালিকানা নিয়ে জমিদারবাড়ির সদস্যরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই সময়ে আদালত স্থগিতাদেশ জারি করে। বাঁধ সংস্কার করার জন্য এ বছর ফের পঞ্চায়েতকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দেন জমিদারবাড়ির সদস্যরা। শোভনলালবাবুর আশা, ‘‘বাঁধের সংস্কার হলে ফের পাখিদের দেখা মিলবে। উপকৃত হবেন গ্রামের মানুষেরও।’’
বর্তমান গ্রামপ্রধান দয়াময় সিংহ অবশ্য বলেন, “ওই বাঁধটি সংস্কারের ক্ষমতা পঞ্চায়েতের নেই। বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতরের দ্বারস্থ হলে, সেখানের ই়ঞ্জিনিয়ার বাঁধ সংস্কারের জন্য ১০ কোটি টাকা খরচের হিসেব দেন। পূর্ত দফতর টাকা অনুমোদন করলেই কাজ শুরু হবে।”