ছেলে ও মায়ের আকুল কান্নায় যেন ম্লান হয়ে গেল পরিচয়ের কাগুজে নথিপত্র

মা তোকে ফিরে পাব ভাবতে পারিনি

পাঁচ বছর পরে পরিবারে ফিরছে হারানো ছেলে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য যখন পরিচয়ের নথি খতিয়ে দেখছেন বাঁকুড়ার শিশু কল্যাণ কমিটির সদস্যরা, প্রসেনজিৎ দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল মাকে। কান্নায় ভেঙে পড়ল দু’জনেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৮
Share:

ফেরা: মায়ের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

পাঁচ বছর পরে পরিবারে ফিরছে হারানো ছেলে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য যখন পরিচয়ের নথি খতিয়ে দেখছেন বাঁকুড়ার শিশু কল্যাণ কমিটির সদস্যরা, প্রসেনজিৎ দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল মাকে। কান্নায় ভেঙে পড়ল দু’জনেই। সেই বাঁধ ভাঙা আবেগের সামনে যেন ম্লান হয়ে গেল কাগুজে পরিচয়।

Advertisement

পাঁচ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল বাঁকুড়ার ময়রাবাঁধের কিশোর প্রসেনজিৎ দাস। প্রসেনজিতের খোঁজে তার মা বেঙ্গি দাস দেড় মাস আগে বাঁকুড়া চাইল্ড লাইনের দ্বারস্থ হন। বারাসতের একটি হোমে সন্ধান মেলে তার। শনিবারই বারাসতের ওই হোম কর্তৃপক্ষ প্রসেনজিৎকে তার পরিবারের হাতে তুলে দিতে আসে। বিষ্ণুপুরের সুমঙ্গলম হোমে নিয়ে গিয়ে বাঁকুড়া শিশু কল্যাণ কমিটির সামনে তাকে পেশ করা হয়।

শিশু কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান মহিনুর আলম বলেন, “মাকে দেখেই এক ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে প্রসেনজিৎ। মা-ও ছেলেকে ফিরে পেয়ে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি।’’ মাকে জড়িয়ে ধরে প্রসেনজিৎ বলে, ‘‘মা তুই কেমন ছিলি? তোকে যে আবার কোনও দিন ফিরে পাব সেটা ভাবতেই পারিনি।’’

Advertisement

বেঙ্গিদেবী বলেন, “পাঁচ বছর ধরে ছেলেকে খুঁজে বেড়িয়েছি আমরা। পুলিশের কাছেও গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও সন্ধান পাইনি। ভাগ্যিস চাইল্ড লাইন পাশে দাঁড়াল। না হলে হয়তো কোনও দিনই আর আমাদের ওকে ফিরে পাওয়া হতো না।’’

তবে এই ক’বছরে প্রসেনজিতদের পরিবারের ছবিটা আরও বদলে গিয়েছে। তার বাবা কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। মা পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। আর সেই অনটনের সংসারে প্রসেনজিৎ কী ভাবে ভাল ভাবে বড় হয়ে উঠতে পারে তা নিয়েই ভেবে যাচ্ছেন শিশু কল্যাণ কমিটির কর্তারা। কমিটির চেয়ারম্যান জানান, প্রসেনজিৎ যাতে পড়াশোনা করতে পারে তার জন্য সরকারি কিছু সাহায্যের বন্দোবস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। বাঁকুড়া চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীলও বলেন, “প্রসেনজিতকে খুঁজে বের করাটা আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এ বার ওর ভবিষ্যৎ যাতে ভাল হয় সেটাই চাইব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন