ক্যাম্পে পুজোয় জওয়ানেরা

সব মিলিয়ে কুচিয়া পঞ্চায়েতের গুড়পানা ক্যাম্পে এক অন্যরকম দিন কাটল রবিবার। বেলা ১১টা থেকে খাওয়াদাওয়া গড়াল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৮
Share:

পাত পেড়ে: গুড়পানায় চলছে খাওয়াদাওয়া। নিজস্ব চিত্র

কারও বাড়ি জম্মু-কাশ্মীরে। কেউ অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, বিহারের বাসিন্দা। পুজো-পার্বনের বাড়িতে যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই জঙ্গলমহল পাহারায় দায়িত্বে থাকা বান্দোয়ানের গুড়পানা ক্যাম্পেই সিআরপি জওয়ানেরা জন্মাষ্টমী পুজোয় মাতলেন। আনন্দ ভাগ করে নিতে আশপাশের গ্রামবাসীকে নিয়ে পঙ্‌ক্তিভোজও করলেন তাঁরা। সব মিলিয়ে কুচিয়া পঞ্চায়েতের গুড়পানা ক্যাম্পে এক অন্যরকম দিন কাটল রবিবার। বেলা ১১টা থেকে খাওয়াদাওয়া গড়াল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।

Advertisement

কাছেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড সীমানা। ঝাড়গ্রামও বেশি দূরে নয়। জঙ্গলের মধ্যে গুড়পানা একসময়ে মাওবাদীদের করিডর ছিল। সে জন্য এখানে সিআরপি-র ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল সেই সময়ে। মাসের পর মাস এখানে থেকে জওয়ানদের সঙ্গে স্থানীয়দের একপ্রকার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ক্যাম্পের ভিতরে জওয়ানদের তৈরি করা মন্দিরেই পুজো হল। শুক্রবার ও শনিবার সেখানেই রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি কিনে এনে তাঁরা পুজোর আয়োজন করেছিলেন। জওয়ানদের মধ্যে থেকেই এক জন পুজোপাঠ করেন। অখণ্ড রামায়ণও পাঠের পরে যজ্ঞও হয়। রবিবার সেখানেই গ্রামবাসীদের নিয়ে পঙ্‌ক্তিভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। সকাল থেকেই জওয়ানেরা রান্নার আয়োজন করেন। পাতে দেওয়া হয় খিচুড়ি, সব্জি, চাটনি, পায়েস ও রসগোল্লা। জওয়ানদের সঙ্গে পরিবেশনে হাত লাগান কিছু বাসিন্দাও।

বান্দোয়ানের যেমন রাজগ্রাম, গোলকাটা, গুড়পানা প্রভৃতি গ্রাম থেকে মানুষজন এসেছিলেন, তেমনই যোগ দেন ঝাড়গ্রাম জেলার বগডোবার লোকেরাও। এখানেই দেখা হয় আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেত্রী জাগরী বাস্কের মা ঠান্ডামণি বাস্কে ও ভাই শোভারাম বাস্কের সঙ্গে। শোভারাম বলেন, ‘‘সিআরপি-র জওয়ানদের সঙ্গে এলাকার মানুষের এখন সম্পর্ক অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। তাঁরা যেমন গ্রামের বিভিন্ন পুজো-পার্বনে যান, তেমনই গ্রামবাসীকেও তাঁরা ডাকেন। জওয়ানেরা কিছুদিন আগে আমাদের গ্রামে গিয়ে জন্মাষ্টমীতে নিমন্ত্রণ করে এসেছিলেন। এসে ভালই লাগল।’’

Advertisement

ক্যাম্পের রক্ষণাবেক্ষণে থাকা ১৬৯ ব্যাটেলিয়নের ডেপুটি কমান্ডার বীরেশ্বর সাহা বলেন, ‘‘পুজোয় বাড়িতে যেতে না পারায় জওয়ানদের অনেকের দুঃখ ছিল। তাই এখানে সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন।’’ এ দিন ক্যাম্পের ভিতরে একটি অফিসের উদ্বোধনও করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন