সাত বছরেও মেলেনি মজুরি, নালিশ

তবে রেশন দোকান পরিদর্শন করে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘুরে বড়সড় কোনও সমস্যা তাঁর চোখে পড়েনি বলেই জানান জেলাশাসক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাশীপুর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৮
Share:

কাছে-পেয়ে: ১০০ দিনের প্রকল্পে পাননি টাকা— জেলাশাসকের গাড়ি দাঁড় করিয়ে সে কথা বলছেন মাজরামুড়া গ্রামের বাসিন্দারা। পাশে কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া। ছবি: সঙ্গীত নাগ

একশো দিনের কাজে আরও গতি আনতে বিশেষ সপ্তাহ উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়। শনিবার, কর্মসূচির প্রথম দিনে কাশীপুর ব্লকে পরিদর্শনে গিয়ে জেলাশাসক শুনলেন কাজ না পাওয়ার অভিযোগ। সাত বছর আগে কাজ করে এখনও মজুরি মেলেনি বলে তাঁর কাছে নালিশ করলেন এলাকার কিছু মানুষ।

Advertisement

এ দিন গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের মাজরামুড়া গ্রামে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া, মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর, বিডিও (কাশীপুর) পার্থ হাজরা প্রমুখ। গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শনের পরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন, এমন সময়ে কয়েক জন জেলাশাসকের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন, জব-কার্ড না থাকায় তাঁরা একশো দিনের কাজ পাচ্ছেন না।

গ্রামের চিত্রকরপাড়ার জিতেন চিত্রকর, হেমলাল চিত্রকরেরা বলেন, ‘‘পাড়ার অন্তত কুড়িটি পরিবারের জব-কার্ড নেই।’’ চিত্রকর পরিবারগুলির প্রধান পেশা পট আঁকা। কিন্তু বছরের সব সময়ে সেই কাজ থাকে না। তখন দিনমজুরি করেন। সমস্যার কথা শুনে জেলশাসক ব্লকের আধিকারিকদের দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন।

Advertisement

ওই গ্রামেরই সাঁওতালপাড়ায় জেলাশাসক পৌঁছানোর পরে তাঁকে ঘিরে ধরে একশো দিনের কাজের মজুরি না পাওয়ার অভিযোগ জানায় কয়েকটি পরিবার। তাঁদের মধ্যে বেলবরণ মুর্মু, সাহেবরাম মান্ডিদের অভিযোগ, ‘‘সাত বছর আগে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গ্রামে রাস্তা তৈরি করেছিলাম। এখনও মজুরি পাইনি।” ওই পাড়ার এক জনের বাড়ির দাওয়ায় বসে বিশদে সমস্যার কথা শোনেন জেলাশাসক। পরে তিনি বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগের সমস্যা। দেখছি কী ভাবে মেটানো সম্ভব।”

তবে রেশন দোকান পরিদর্শন করে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘুরে বড়সড় কোনও সমস্যা তাঁর চোখে পড়েনি বলেই জানান জেলাশাসক। মাজরামুড়া থেকে বেরিয়ে তিনি গিয়েছিলেন তালাজুড়ি শ্রীমতি হাইস্কুলে। আগে পুরুলিয়ার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে ‘কন্যাশ্রী বড়দি’দের নিয়ে হওয়া শিবিরে ওই স্কুলের ছাত্রী সুমনা চট্টোপাধ্যায় জেলাশাসককে জানিয়েছিল, তাদের এলাকার কিছু মানুষ কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেন। সে কথা মাথায় ছিল জেলাশাসকের। ওই স্কুলে গিয়ে এ দিন কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে বিশদে খোঁজ নেন তিনি। বলেন, ‘‘এ দিন স্কুলে গিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করে কম বয়সে বিয়ে না দেওয়ার ব্যাপারে সচেতনতা প্রচারে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে।’’

ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লক পরিদর্শন করেছেন জেলাশাসক রাহুলবাবু। জঙ্গলমহলের কয়েকটি ব্লকের পরে তিনি গিয়েছিলেন রঘুনাথপুর মহকুমার সাঁতুড়িতে। তার পরে এ বার ওই মহকুমারই কাশীপুর ব্লকে গেলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ওই ব্লকে পৌঁছে সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে দু’দফায় বৈঠক করেন। শনিবার বেরোন ব্লক পরিদর্শনে ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন