প্রয়াত ফব সাংসদের মূর্তি ভাঙল ঝালদায়

রাতের অন্ধকারে কে বা কারা ভেঙে দিল পুরুলিয়ার প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ চিত্ত মাহাতোর আবক্ষ মূর্তি। প্রয়াত সাংসদের এই আবক্ষ মূর্তিটি ঝালদার বীরসা মোড়ে বেশ উঁচু বেদির উপরে বসানো ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৬ ০১:১৬
Share:

রাতের অন্ধকারে কে বা কারা ভেঙে দিল পুরুলিয়ার প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ চিত্ত মাহাতোর আবক্ষ মূর্তি। প্রয়াত সাংসদের এই আবক্ষ মূর্তিটি ঝালদার বীরসা মোড়ে বেশ উঁচু বেদির উপরে বসানো ছিল। শুক্রবার সকালে স্থানীয় মানুষ দেখতে পান, পুরুলিয়া-রাঁচি ও ঝালদা-বাঘমুন্ডি রাস্তার মোড়ে থাকা মূর্তিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ফব নেতা মুকেশ দাস জেলা নেতৃত্বকে ঘটনাটি জানান।

Advertisement

দল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝালদা থানা এলাকার ইলু গ্রামের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন মাহাতো প্রথমবার ১৯৬৭ সালে ঝালদা কেন্দ্র থেকেই বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন পেশায় শিক্ষক। পরের দু’টি নির্বাচনে অবশ্য তিনি হেরে যান। ১৯৭৭ সালে পুরুলিয়া লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবার সাংসদ হন। এর পর আর তাঁকে পিছনে তাকাতে হয়নি। আমৃত্যু তিনি ছিলেন লোকসভার সদস্য। ’৭৭ সালের পর থেকে পরপর চার বারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি পুরুলিয়া কেন্দ্র থেকেই জিতে সংসদের সদস্য হয়েছিলেন। ১৯৯১-এর ৭ জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিত্তবাবুর মৃত্যু হয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের ঝালদা জোনাল কমিটির উদ্যোগে ওই বছরই এই নেতার আবক্ষ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন চিত্তবাবুর সহোদর, তৎকালীন বিধায়ক সত্যরঞ্জন মাহাতো।

চিত্তবাবুর মৃত্যুর পরে যিনি পুরুলিয়া কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছিলেন সেই ফব নেতা বীরসিংহ মাহাতো বলেন, ‘‘চিত্তদার মূর্তি ভাঙার খবরে আমরা অবাক। কেন না তিনি অজাতশত্রু ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে আমরা গোটা লোকসভা এলাকা তাঁর মরদেহ ঘুরিয়েছিলাম। দেখেছিলাম সমস্ত জায়গাতেই কাতারে কাতারে মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, এটা কোন দুষ্কৃতী বা অসুস্থ মস্তিস্কের মানুষের কাজ। পুরুলিয়ার কোনও রাজনৈতিক দলের লোক চিত্তবাবুর মতো নেতার মূর্তি ভাঙতে যাবে না। একই কথা বলেছেন ফব-র জেলা সম্পাদক নরহরি মাহাতোও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চিত্তবাবুর মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব।’’ আপাতত মূর্তিটি ফব-র দলীয় পতাকা দিয়ে মুড়ে রাখা হয়েছে।

Advertisement

পুরুলিয়ার সাংসদ, তৃণমূলের মৃগাঙ্ক মাহাতোও এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘পুরুলিয়ার একটা রাজনৈতিক শিষ্টাচার রয়েছে। এখানে সমস্ত দলের নেতার মূর্তি রয়েছে। কোন মূর্তিই আক্রান্ত হয়নি। চিত্তবাবু ও আমার বাবা সীতারাম মাহাতো দু’জনে রাজনৈতিক ভাবে দুই মেরুর হলেও তাঁদের সুন্দর সম্পর্ক ছিল। আমাকেও ভালবাসতেন চিত্তবাবু। আমি মর্মাহত। মূর্তি ভাঙার ঘটনার নিন্দা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন