দাঁড়িয়ে রয়েছে বালির গাড়ি। ট্রাক থেকে জল ঝরে পড়ছে রাস্তায়। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
ভিজে বালি বোঝাই ওভারলোড ট্রাকের চাপে রাস্তা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রশাসনের সকল স্তরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এ ছবি নিত্য দিনের।
স্থানীয় বাসিন্দারা তাই ওভারলোড রুখতে নিজেরাই পথে নামলেন। ওভারলোড ট্রাক আটক করে অতিরিক্ত বালি নামিয়ে দিতে বাধ্য করেছেন তাঁরা। অন্যথায় আটকে দিয়েছেন ট্রাক। ঘটনাটি ঘটেছে, ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর মোড়ে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি-বহরমপুর সড়ক লাগোয়া সাঁইথিয়া থেকে ময়ূরেশ্বর থানা এলাকা পর্যন্ত বহু বৈধ এবং অবৈধ বালির ঘাট রয়েছে। ওইসব ঘাটগুলি থেকে প্রতি ঘন্টায় শয়ে শয়ে ওভারলোড ট্রাক ভর্তি বালি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচার করা হয়। নদীর ভেজা বালির পাশাপাশি পাম্পে করে মাটির নীচে থেকে তোলা বালিও পাচার করা হয় বলে অভিযোগ।
এর ফলে বালি বোঝাই ওইসব ট্রাকের জল পড়ে অধিকাংশ সময় গোটা রাস্তা থিকথিকে কাদাতে ভর্তি হয়ে থাকে। পিচ-পাথর সরে গিয়ে রাস্তা খানাখন্দে পরিণত হতে শুরু করেছে। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
এ দিন সেই অভিযোগে কোটাসুর মোড় ব্যবসায়ী সমিতি এবং এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে সকাল ১০টা থেকে ওভারলোড ট্রাক আটকে চালকদের অতিরিক্ত বালি নামাতে বাধ্য করেন। আর ফলে ট্রাকের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। অন্যান্য যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। টনক নড়ে প্রশাসনের। বেলা ১২টা নাগাদ পুলিশী হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুখেন্দুবিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘সামনেই পুজো। দিনরাত বালি বোঝাই ট্রাকের জল পড়ে রাস্তায় যাওয়াই যায় না। পীচ-পাথর উঠে খানাখন্দে পরিণত হচ্ছে। মানুষজন রাস্তা দিয়ে আসতেই চাইছে না। তাই আমাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। তার উপর মোড়েই রয়েছে পুজো মণ্ডপ। রাস্তার এমন হাল হলে মানুষজন পুজো দেখতেই বা আসবেন কেমন করে!’’
ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম সদস্য সদানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘বার বার প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করেও কোনও কাজ না হওয়ায় আমাদেরই শেষ পর্যন্ত পথে নামতে হল।’’
পুলিশ জানায়, ওভারলোড রুখতে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়। ধরা পড়লে জরিমানাও করা হয়। তবে এ বার থেকে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।