মিষ্টিমুখেই লঙ্কার ঝাঁঝ পাবে ভাইয়েরা

বাঁকুড়া শহরের রানিগঞ্জ মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী সোমনাথ বরাট ভাইফোঁটায় নতুন নতুন মিষ্টি তৈরি করেন। তিনি জানাচ্ছেন, কাজু, খোয়া, ছানার সঙ্গে একটি ব্র্যান্ডেড চকোলেটের ফ্লেভার মিশিয়ে অল্প বয়সি ভাইবোনদের জন্যই চকোলেট বিস্কুটের আইটেম তৈরি করেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:০০
Share:

থরে থরে: বৃষ্টিতে খদ্দেরের দেখা নেই। পুরুলিয়া শহরে। —নিজস্ব চিত্র।

চকোলেট থেকে ঠান্ডা পানীয়— এ সবেরই স্বাদ মিলবে ভাইফোঁটার সন্দেশে। রসগোল্লা, কাঁচাগোল্লা, রস মালাই, কালাকাঁদের মতো বাঁধাধরা গতের মিষ্টির পাশাপাশি বাঁকুড়ার ক্রেতাদের মনের আশ মেটাতে গত কয়েক বছর ধরেই নানা পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। যার জেরে উৎসবের পাতে কখনও উঠে এসেছে ম্যাঙ্গো মিষ্টি তো কখনও কাজু-আঁজির জিলিপি। এ বারও নতুনত্বের অভাব নেই বাঁকুড়ার মিষ্টির বাজারে। পিছিয়ে নেই পুরুলিয়াও।

Advertisement

বাঁকুড়া শহরের রানিগঞ্জ মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী সোমনাথ বরাট ভাইফোঁটায় নতুন নতুন মিষ্টি তৈরি করেন। তিনি জানাচ্ছেন, কাজু, খোয়া, ছানার সঙ্গে একটি ব্র্যান্ডেড চকোলেটের ফ্লেভার মিশিয়ে অল্প বয়সি ভাইবোনদের জন্যই চকোলেট বিস্কুটের আইটেম তৈরি করেছেন তাঁরা। এ ছাড়া মিরিন্ডা সন্দেশে মিলবে ঠান্ডা পানীয়ের স্বাদ।

এ ছাড়া রয়েছে ছানা ও মালাইয়ের মিশ্রণে তৈরি মোহিনী। সোমনাথবাবু বলেন, “ছোট, বড় সবার কথা ভেবেই এ বার ভাইফোঁটার মিষ্টি তৈরি করেছি আমরা। দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় প্রমাণ মাপের রসগোল্লার ভিতর কাজু ও খোয়া দিয়ে তৈরি বৈকুন্ঠভোগও থাকছে।’’

Advertisement

বাঁকুড়ার রামপুর মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী নবকুমার নাগ বলেন, “গত বছর আমরা কাজু, আঁজির জিলিপি তৈরি করেছিলাম। বেশ ভাল সাড়া পেয়ে এ বারও ওই মিষ্টি রেখেছি।” তিনি জানাচ্ছেন, নতুন ধরনের মিষ্টির মধ্যে এ বার তাঁদের বিশেষ আকর্ষণ— কাঠ বাদাম বরফি, কাজু তরমুজ, কেশর মালাই, বাটার রোল।

পুরুলিয়া শহরের ওল্ড মানবাজার রোডের একটি মিষ্টির দোকানে থাকছে কাঁচালঙ্কার রসগোল্লা। ঝাল-মিষ্টির এমন উল্টো স্বাদের রহস্য ভাঙলেন দোকানদার রাহুল পোদ্দার। তিনি বলেন, ‘‘মোটেই ঝাল নয়। কামড় দিলে শুধু কাঁচালঙ্কার গন্ধ আসবে। স্বাদ কিন্তু মিষ্টিই।’’ এ ছাড়া তাঁদের আকর্ষণ স্ট্রবেরি রাজভোগ, বেকড রসগোল্লা, আপেলপ্লাজা, রসমালাই, পাইনঅ্যাপেল, ত্রিবেণী চমচম, রাবড়ি, ক্ষীরের শিঙাড়া, জলভরা।

পি এন ঘোষ স্ট্রিটের মিষ্টি ব্যবসায়ী মণীশ রাজগড়িয়া জানাচ্ছেন, গুলাবজামুন তো আছেই। সঙ্গে ভাইফোঁটা স্পেশ্যাল জলভরা, মালাই রাবড়ি, মালাইবাটি, বালুসাই, চন্দ্রকলার মতো মিষ্টিও রয়েছে। তিনি বলেন, লোকে এখন কম চিনি মিষ্টি পছন্দ করেন। সে রকম নানা মিষ্টি রেখেছি আমরা।’’

বি টি সরকার রোডের মিষ্টি ব্যবসায়ী সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কড়াপাকের নানা সন্দেশের পাশাপাশি রসমালাই, তালশাঁস, ক্ষীরের শিঙাড়া রেখেছি আমরা।’’

জিএসটি-র জন্য মিষ্টির দর বাড়বে বলে গুঞ্জনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সহকারী সম্পাদক জয়ন্ত বরাটের আশ্বাস, ‘‘মিষ্টির উপরে এখনও ওই কর বসেনি। ফলে এ জন্য দাম বাড়ছে না।’’

তবে শুক্রবার দিনভর বৃষ্টির জেরে বিকেল পর্যন্ত তেমন ভাবে ক্রেতারা বাজারেই বের হতে পারেননি। বাঁকুড়া শহরের নুনগোলা রোডের বাসিন্দা প্রবীর ঘোষ বলেন, “বৃষ্টির জন্য সারা দিন বের হতে পারলাম না ভাইফোঁটার কেনাকাটা করতে। তবে এই অনুষ্ঠানে তো আর মিষ্টি না কিনে থাকা যায় না। তাই বৃষ্টি একটু ধরলেই বাজারে যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন