পাড়ুইয়ের হাঁসড়ায় নির্বাচনী জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
নকুলদানা-প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নোটিস হাতে পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। শনিবার ইলামবাজার ব্লকে এক জনসভায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
এ দিন হাঁসড়া গ্রামে এক সভায় তৃণমূল জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘কীসের শো-কজ! এত রোদে নকুলদানা দিতেই হবে। নকুলদানা দিলে কি মানুষের রক্ত খারাপ হয়ে যাবে? রক্ত পরিষ্কার হবে, মানুষের বুদ্ধি খুলবে। নকুলদানা যত বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে, তত তৃণমূল কংগ্রেসকে সকলে ভোট দেবেন।’’
সভার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি জানান, শনিবার বাড়িতে ওই নোটিস তিনি হাতে পেয়েছেন। এখনও তার উত্তর দেননি। তবে দ্রুত কমিশনকে শো-কজের জবাব পাঠাবেন।
ইলামবাজার ব্লকে এ দিন দু’টি সভা করেন অনুব্রত। প্রথমটি হয় হাঁসড়া গ্রামের খেলার মাঠে। অন্যটি ঘুড়িসার আমবাগান বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ধানজমিতে।
ঘুড়িসার সভায় অনুব্রতের মন্তব্য নিয়ে দলের অন্দরমহলেও জল্পনা ছড়িয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘ভয় পাবেন না। আগেকার বুথ সভাপতিরা থাকবেন। ভয় করবেন না। ফোঁস করবেন, তাড়া করবেন। মারবেন না।’’ দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, ইলামবাজারের কোনও কোনও প্রান্তে দলের অন্তর্কলহের ইঙ্গিত ওই মন্তব্যে মিশে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হাঁসড়ার সভার মঞ্চে ওঠেন অনুব্রত। সেখানে ছিলেন দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। তবে বোলপুর কেন্দ্রের প্রার্থী অসিত মাল সেখানে ছিলেন না। ঘণ্টাখানেক পরে তিনি যান ঘুড়িসায়।
এরই মধ্যে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘তিরুপতি, বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে নকুলদানাই প্রসাদ। পাথরচাপুড়িতেও তাই। এর অনেক গুণ। সব ভোটের পরে বলব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে আমি শ্রদ্ধা করি। নকুলদানা উনিও খান। আমিও খাই।’’
জনসভায় দলের নেতা-কর্মীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের বার্তা বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি আবার বলছি, তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। এটাই ঘটনা। আমরা মানুষকে ঠকাই না।’’ একইসঙ্গে তিনি নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথকেও। জনসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিল থেকে শুরু করে অন্য নানা সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন। সেগুলি জনস্বার্থ-বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেন অনুব্রত। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার কোনও প্রতিশ্রুতিই পালন করেননি বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।