দশ বছর পরে ফের বোলপুরে তৃণমূলের প্রার্থী অসিত মাল

গত বছরের পুজোর পরেই জেলা তৃণমূলের অন্দরে ছড়িয়েছিল সেই জল্পনা। কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছিল, এ বার বোলপুরে তৃণমূলের প্রার্থী হতে পারেন অসিত মাল।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪৮
Share:

গত বছরের পুজোর পরেই জেলা তৃণমূলের অন্দরে ছড়িয়েছিল সেই জল্পনা। কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছিল, এ বার বোলপুরে তৃণমূলের প্রার্থী হতে পারেন অসিত মাল। রবিবার বিকেলে ভোট-নির্ঘণ্ট জানার পরেই তাঁর প্রচারে হয়েছিল দেওয়াল লিখনও। যদিও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হওয়ায় তড়িঘড়ি তা মুছে দেওয়া হয়।

Advertisement

অবশেষে জল্পনাই সত্যি হল। মঙ্গলবার দুপুরে বোলপুর লোকসভা আসনে সেই পাঁচ বারের কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মালই লড়তে চলেছেন বলে জানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দশ বছর বাদে ফের বোলপুর থেকে দাঁড়াতে চলেছেন তিনি। তবে, দলটা বদলে গিয়েছে।

ঘটনা হল, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া অসিত যে লোকসভা ভোটে বোলপুরে প্রার্থী হতে পারেন— কয়েক মাস ধরে এমন ইঙ্গিত মিলছিল দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কথাবার্তায়। সম্প্রতি আমোদপুরে দলীয় কর্মিসভায় অসিতকে কর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অনুব্রত। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই লোকটাকে চিনে রাখুন। খুব ভাল মানুষ। প্রয়োজনে আপনাদের কাজে লাগবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দলের অন্দরের খবর, বোলপুরে দলের বিদায়ী সাংসদ অনুপম হাজরাকে নিয়ে কয়েক মাস ধরেই ‘বিব্রত’ ছিলেন রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। ‘বিরক্ত’ ছিলেন অনুব্রতও। দিনদিন দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন অনুপম। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি সে কথা জানিয়েওছিলেন। এ দিন তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরপরই বিজেপিতে যোগ দেন অনুপম।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলে যোগদানের পর থেকে অনুব্রত তো বটেই, দলের শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমদের ‘সুনজরে’ ছিলেন অসিত। ধীরে ধীরে তৃণমূলের ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অনুব্রতের কার্যত সভা সভাতেই দেখা যেত তাঁকে। বীরভূমের রাজনীতির ময়দানে অসিত যথেষ্ট পোড়খাওয়া। ১৯৭৭ সালে হাঁসন কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রথম বার নির্বাচনের ময়দানে নেমেছিলেন অসিতবাবু। সে বার পরাজিত হলেও, ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের প্রতীকে লড়ে জয়ী হন। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। কংগ্রেসের চিহ্নে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৭ বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পাঁচ বার বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালের ২১ জুলাই তৃণমূলে যোগ দেন অসিত। তৃণমূলের টিকিটে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হন সেই হাঁসনেই। কিন্তু কংগ্রেসের মিলটন রসিদের কাছে ২৫ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত হন অসিত।

বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রেও একেবারে নতুন মুখ নন অসিত। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট প্রার্থী ছিলেন তিনি। তবে সিপিএমের রামচন্দ্র ডোমের কাছে ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৮২ ভোটে পরাজিত হন। ১০ বছর পরে সেই কেন্দ্রে ফের লড়াইয়ে নামার আগে অসিত বলছেন, ‘‘দেশের কঠিন সময়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার ডাক দিয়েছেন। সেই কাজে আমাকে তাঁর সৈনিক করেছেন। এতে আমার দায়িত্ব আরও অনেক বেড়ে গেল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement