‘বিরক্ত’ না করার নির্দেশ

মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘বিরক্ত করলে, জানতে পারব। আর সে দিন কিন্তু আমার থেকে বড় শত্রু আর কেউ হবে না।’’ 

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল 

সাঁতুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ০২:৪০
Share:

নিশানা: নির্বাচনী জনসভায়। মঙ্গলবার বড়জোড়ায়। ছবি: বিকাশ মশান

যত শিল্প হবে, তত চাকরি হবে। রাজ্যের উন্নয়ন হবে। তাই কোনও মতে শিল্পপতিদের ‘বিরক্ত’ করা চলবে না। পুরুলিয়ার শিল্পতালুক রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় সভা করতে এসে মঙ্গলবার এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

সাঁতুড়ির ঢেঁকশিলা স্কুলের মাঠে তৃণমূলের সভা ছিল। সেখানে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘নতুন শিল্প হলে এখানকার ছেলেমেয়েদের বাইরে দৌড়তে হবে না। বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েরা যা চাকরি পাবে, তাতেই তারা ভেসে যাবে। কেউ কোনও ভাবে কাউকে ডিস্টার্ব করবেন না।’’ মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘বিরক্ত করলে, জানতে পারব। আর সে দিন কিন্তু আমার থেকে বড় শত্রু আর কেউ হবে না।’’

দলনেত্রীর এই বার্তা তৃণমূলেরই একাংশকে মনে করিয়ে দিচ্ছে গত বছর পুরুলিয়ার বেলগুমা পুলিশ লাইনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার কথা। সেখানেও তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কানে রঘুনাথপুর এলাকায় সরকারি কাজে টাকা চাওয়ার অভিযোগ এসেছে। তখন তিনি পুলিশ সুপারকে বিষয়টি দেখতে বলেছিলেন। রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রঘুনাথপুরকে শিল্পায়নের মোড়কে ঢেলে সাজাতে চাইছেন। রঘুনাথপুরে বিনিয়োগের আর্দশ পরিবেশ তৈরির জন্য তিনি সর্বদাই সচেষ্ট। তাই আগাম সর্তক করেছেন।” পরে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শিল্পপতিরা যেন বলেন, এখানে কোনও জুলুম নেই। যত শিল্প হবে তত চাকরি হবে।’’

Advertisement

রঘুনাথপুর মহকুমার অন্যতম শিল্পাঞ্চল সাঁতুড়ি। এ দিন সাঁতুড়িতে মমতার বক্তব্যের অনেকটাই জুড়ে ছিল রঘুনাথপুরে শিল্পের উন্নতিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা। তিনি বলেন, ‘‘রঘুনাথপুরে শিল্পায়নের একটা বড় কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে, সেটা অনেকেই জানেন না।’’ জানান, রঘুনাথপুর ছুঁয়ে যাবে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর’। ২,৬০০ একর জমির উপরে কারখানা হবে। দাবি করেন, ইতিমধ্যেই তিন হাজার একর জমির উপরে চারটি ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ পার্ক’ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। এলাকার অর্থনীতিটাই পুরোপুরি বদলে যাবে।’’

রঘুনাথপুর বিধানসভা বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এই এলাকায় শিল্পের বিষয়টি প্রচারে হাতিয়ার করেছে বামেরা। বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া প্রচারে বলছেন, বাম-আমলে শিল্পায়নের যা কাজ হয়েছিল, গত আট বছরে তা এগোয়নি। বাসুদেববাবু এ দিন বলেন, ‘‘উনি (মমতা) শুধু গত চার বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন। নতুন কারখানার একটা ইটও গাঁথা হয়নি। পুরোটাই নির্বাচনী গিমিক।’’ আর পুরুলিয়ার কাশীপুরে এ দিন বিজেপির সভা থেকে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের তোলাবাজির জন্য রাজ্যে শিল্পের বন্ধ্যা দশা। তাই এ সব বলতে হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন