খুশির হাওয়া গেরুয়া শিবিরে

নজরে জেলা, দুই সভায় মোদী-শাহ

দলের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই নেতা জেলায় সভা করবেন— রবিবার  দুপুরে এই খবর রাজ্য নেতৃত্বে কাছ থেকে জেলায় পৌঁছতেই খুশির হাওয়া গেরুয়া শিবিরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাদতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫১
Share:

সব ঠিকঠাক চললে নির্বাচনী জনসভা করতে বীরভূম জেলায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আসার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিরও। বিজেপি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ২৪ এপ্রিল মোদী সভা করবেন বোলপুরে। তার দু’দিন আগে ২২ তারিখ অমিত শাহের নির্বাচনী জনসভা হওয়ার কথা সিউড়িতে। মোদীর সভার সম্ভাব্য সময় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট। তবে শাহ-র সভার সময় এখনও ঠিক হয়নি।

Advertisement

ঘটনা হল, চলতি জানুয়ারি মাসে কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার জন্য সিউড়ি জনসভায় আসতে পারেননি অমিত শাহ। এ বার ভোটে বিজেপি-র পালে হাওয়া তুলতে প্রচারে আসুন শাহ ও মোদী— এমনটাই চাইছিলেন জেলা বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। দলের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই নেতা জেলায় সভা করবেন— রবিবার দুপুরে এই খবর রাজ্য নেতৃত্বে কাছ থেকে জেলায় পৌঁছতেই খুশির হাওয়া গেরুয়া শিবিরে। জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘এ দিনই দুপুর ১২টা নাগাদ মোদীজি ও অমিতজির সূচি পেয়েছি। আমরা আপ্লুত। সভা দু’টি সফল করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন সকলে।’’

রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বোলপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভার মাঠ অবশ্য এখনও ঠিক হয়নি। ২২ তারিখ সিউড়িতে অমিত শাহের সভা করার পরিকল্পনাও আমরা করেছি। কিন্তু, সে ব্যাপারে ওঁর দিক থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।’’ দলের একাধিক জেলা নেতা বলছেন, দুই হেভিওয়েট নেতা পরপর দু’টি লোকসভা এলাকায় সভা করতে আসছেন। এই অবস্থায় জোড়া সভার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করাই দলের কাছে চ্যালেঞ্জ। তবে, আসল কাজ মাঠ জোগাড় করা। যা নিয়ে অতীতের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। জানুয়ারিতে অমিতের সভার জমি খুঁজে পেতে কালঘাম ছুটেছিল জেলা বিজেপি-র। শেষ পর্যন্ত দলেরই নেতা কালোসোনা মণ্ডলের ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন জমিকে বেছে নেওয়া হয়।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগেও মোদী ও শাহের বীরভূম সফর নিয়ে কোনও নিশ্চিত সূচনা ছিল না জেলা বিজেপি-র কাছে। বরং যোগী আদিত্যনাথ এবং স্মৃতি ইরানির সম্ভাব্য বীরভূম সফরকে ঘিরেই লোকসভার নির্বাচনের আগে প্রচারযুদ্ধে ঢেউ তুলতে চেয়েছিল বিজেপি। তবে শাহ-মোদী জুটির আসা নিশ্চিত হওয়ার পরে এখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের সফর সম্ভবত বাতিল হবে বলেই বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে। তবে স্মৃতি ইরানি আসছেন ১৯ তারিখ। তিনি সভা করবেন ইলামবাজারে। আজ, সোমবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জেলার দু’প্রান্ত কীর্ণাহার ও দুবরাজপুরে দু’টি রোড শো করবেন।

জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট বিজেপির ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ যাত্রায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। তার বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘গণতন্ত্র বাঁচাও সভা’ করার ঘোষণা করেছিল বিজেপি। ঠিক ছিল রাজ্যের পাঁচ জায়গায় পাঁচটি সভা করবেন অমিত শাহ। সেই তালিকায় ছিল বীরভূমও। কিন্তু তাঁর অসুস্থতার খবরে মুষড়ে পড়েছিলেন কর্মকর্তারা। পরে ঠিক হয় শাহ না এলেও তাঁর পরিবর্তে স্মৃতি ইরানি আসবেন। আসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়েরও। কিন্তু ২৩ জানুয়ারি সিউড়ির সেই সভায় স্মৃতি বা কৈলাসও আসেননি। তাতে চূড়ান্ত হতাশ হয়েছিলেন কর্মীরা।

রবিবারের মোদীর সভা করার খবরে আবার চাঙ্গা বিজেপি কর্মীরা। দল সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনে প্রতিটি দফার আগে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে একাধিক সভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। মোদী, অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথ— এই তিন জনই এ বারের নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি-র সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রচারক। মোদী এবং শাহ প্রত্যেক দফার ভোটগ্রহণের আগে একটি করে সভা করবেন রাজ্যের নানা প্রান্তে। সেই ফর্মূলা বীরভূমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয় কিনা, সেটার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। রামকৃষ্ণবাবুর দাবি, সেটাই হতে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন