এখনও: বাঁকুড়া মেডিক্যালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার ইউনিটের সামনে। নিজস্ব চিত্র
আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ার পর দ্রুত সরকারি জায়গা থেকে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ছবি বা প্রচার সরিয়ে দেওয়ার কথা। অথচ ভোট ঘোষণার পর দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সর্বত্র সেই কাজ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া পোলিও-র প্রচারের ফেস্টুন। এমন উদাহরণ আরও রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক উমাশংকর এস। তিনি বলেন, “অবিলম্বে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রশাসনের উপরে চাপ তৈরি করছে বিরোধীরা। কেন ভোট ঘোষণার এতদিন পরেও সব সরকারি জায়গা থেকে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ছবি বা রাজনৈতিক দলে ব্যানার-হোর্ডিং এবং দেওয়াল লিখন দেখা যাবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। এই ঘটনা প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যের সমস্ত অফিস কাছারি সারা বছর রাজ্যের শাসক দলের নেতানেত্রীদের ছবিতে ভরে থাকে। ভোট ঘোষণার পরেও সেগুলি সরানো হচ্ছে না। এটা দেখে অবাক হচ্ছি।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতির অভিযোগ, “প্রশাসন কতটা নিরপেক্ষ, এগুলো তারই প্রমাণ। না হলে ভোট ঘোষণার পরেই প্রচারমূলক ছবি-ব্যানার সরিয়ে
নেওয়া হতো।”
এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “ভোট ঘোষণার পর থেকেই প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। কোনও রাজনৈতিক দলের থেকে অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারপরেও বিরোধীরা কেন এমন অভিযোগ তুলছেন তা বুঝতে পারছি না।”
এবারের লোকসভা ভোটেই ‘সি-ভিজিল’ নামে একটি ‘অ্যাপ’ চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলি আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগ সরাকরি নির্বাচন কমিশনের কাছে পাছাতে পারছেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই ‘অ্যাপে’র মাধ্যমে ৮১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। যার মধ্যে সিংহ ভাগ অভিযোগই সরকারি বা পাবলিক প্লেসে নেতানেত্রীর ছবি বা রাজনৈতিক দলের ভোট প্রচার সংক্রান্ত। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ১৯ টি অভিযোগের কোনও সত্যতা মেলেনি। বাকিগুলির ক্ষোত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ‘সি ভিজিল’ ছাড়াও ১৯৫০ টোল ফ্রি নম্বরেও ফোন করেও অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও অভিযোগ আসছে। জেলাশাসক বলেন, “কোথাও কোনও অভিযোগ পেলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”