হেনস্থা: কোথায় চোট, দেখাচ্ছেন তোশিবানন্দ বাগ। নিজস্ব চিত্র
আক্রান্ত ব্যক্তির গাড়ির নম্বর প্লেট দেখে ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই সেই গাড়ি কার নামে আছে, তা খুঁজে বের করে নিতে পারলেন তদন্তকারীরা। তা হলে হামলাকারীর গাড়ির নম্বর দেখে তার পরিচয় জানতে দেরি হচ্ছে কেন, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের কাছে সেই প্রশ্নই তুললেন চিকিৎসকেরা।
শুক্রবার রাতে বাঁকুড়া শহরের সার্কিট হাউস মোড়ে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক তোশিবানন্দ বাগের উপরে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক। হামলাকারী মোটরবাইকে এসেছিল। অভিযোগ, মোটরবাইক থেকে নেমে কলার ধরে ওই চিকিৎসককে রাস্তায় ফেলে দেয় সেই যুবক। ‘আমি কে জানিস?’— বলে তোশিবানন্দবাবুকে লাথি, ঘুঁষি, থাপ্পড় মারে। কিছুক্ষণের মধ্যে মোটরবাইক স্টার্ট করে চম্পট দেয় সে। ঘটনার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই বাঁকুড়া সদর থানায় অভিযোগ জানান তোশিবানন্দবাবু। ঘটনাস্থলে লাগানো পুলিশের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে মারধরের ঘটনাটি। তদন্তে নেমে পুলিশ সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখা শুরু করে। যদিও সোমবার পর্যন্ত অজ্ঞাতপরিচয় ওই হামলাকারীর পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। দ্রুত হামলাকারীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবিতে এ দিন পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরার কাছে স্মারকলিপি দেয় ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) বাঁকুড়া শাখা।
তোশিবানন্দবাবু এ দিন বলেন, “সিসি ক্যামেরায় আমার গাড়ির নম্বর প্লেট দেখে সেই গাড়ি কার নামে রয়েছে, তা দ্রুত বের করে নিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। ওই ক্যামেরাতেই তো হামলাকারীর মোটরবাইকের নম্বর প্লেটেরও ছবি এসেছে। তা হলে তার পরিচয় উদ্ধার করতে এতটা সময় লাগছে কেন?’’ আইএমএ-র বাঁকুড়া শাখার সম্পাদক অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি স্মারকলিপি কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে পারিনি। শুনেছি, পুলিশ সুপার দ্রুত হামলাকারীকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে এত দিন সময় লাগছে, এটাই দুর্ভাগ্য।’’
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় উঠেছে সব মহলেই। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত ওই হামলার ঘটনাকে নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, “প্রকাশ্য রাস্তায় এক জন ব্যক্তিকে পেটানোর ঘটনা কোনও দিনই সমর্থন করা যায় না।’’ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও হামলাকারীকে শনাক্ত করে তাকে ধরতে পুলিশের এতটা সময় লাগছে কেন, সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে চিকিৎসক মহলে। পুলিশ সুপার বলেন, “হামলাকারীর পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এর বেশি কিছু বলব না।’’