Madhyamik Examination 2024

পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় জোর মমতার

বনাঞ্চলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকছে বলে বুধবার আরও এক বার আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ঘন কুয়াশার মধ্যে শুরু হচ্ছে দিন। তার মধ্যেই এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার সময় সকাল এগিয়ে এনে সকাল সাড়ে ৮টা করে দেওয়ায় চিন্তায় পড়েছে হাতি উপদ্রুত দু’জেলার পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিজনেরা। দু’জেলার জঙ্গলে বেশ কিছু সংখ্যা হাতি থাকায় উদ্বেগে বনদফতরও। তাই মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সারা প্রশাসনেরও বড় পরীক্ষা হয়ে উঠেছে।

Advertisement

বনাঞ্চলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকছে বলে বুধবার আরও এক বার আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে, ভাল করে পরীক্ষা দিক। বনাঞ্চলে যেহেতু হাতির তাণ্ডব থাকে, বনকর্মীরা পরীক্ষার্থীদের বনাঞ্চল থেকে নিয়ে গিয়ে বাসে করে পরীক্ষা হলে পৌঁছে দেবেন।’’

বছরের গোড়াতেই বড়জোড়ায় হাতির হানায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও সারা জেলায় প্রায় ৬০টি হাতি রয়েছে। হাতি উপদ্রুত বেলিয়াতোড়ের খাগের এক ছাত্রের বাবা বিধান ঘোষ বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রের পথে বেশ কিছুটা রাস্তা হাতি উপদ্রুত জঙ্গলের মধ্যে। তাই এলাকার সব পরীক্ষার্থীরা গাড়ি ভাড়া করেছে।’’ পুরুলিয়ার অযোধ্যাপাহাড়েও হাতিদের আনাগোনা রয়েছে। ঝালদা বনাঞ্চলের রাণিডি গ্রামের রামআশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সোনালি মাহাতোর পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়ি থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে জারগো উচ্চ বিদ্যালয়ে। তার কথায়, ‘‘সকালে কুয়াশায় পথঘাট ভাল ঠাহর হয় না। অনেকখানি জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। হাতিও ভোরের দিকে জঙ্গলপথে ঘুরে বেড়ায়। তাই খুব ভয়ে আছি।’’

Advertisement

পুরুলিয়া উত্তর বন বিভাগ জানাচ্ছে, জঙ্গলঘেঁষা এলাকা থেকে কতজন পরীক্ষা দিচ্ছে, সে তথ্য তারা সংগ্রহ করে রেখেছে। সে মতো বিভিন্ন গ্রামের নির্দিষ্ট জায়গায় বন দফতর গাড়ি পাঠিয়ে তাদের বাসস্টপ পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। সেখান থেকে পরীক্ষার্থীরা প্রশাসনের গাড়িতে বা বাসে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবে। পুরুলিয়ার ডিএফও কার্তিকেয়ন এম বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের যাতে কেন্দ্রে যেতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য বন দফতরের তরফে যানবাহনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) উজ্জ্বল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘জঙ্গলপথে হুলাপার্টির নজরদারি থাকবে।’’

মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির বাঁকুড়া জেলা আহ্বায়ক সুজিত সিংহ মহাপাত্রেরও আশ্বাস, জঙ্গলঘেঁষা সোনামুখীর কোচডিহি কবি সুকান্ত বিদ্যাপীঠ, পাথরমোড়া হাইস্কুল, জয়পুরের চ্যাংডোবা হাইস্কুল, বেলিয়াতোড়ের ছান্দারের পাঁচাল হাইস্কুল, বড়জোড়ার সাহারজোড়া হাইস্কুল, ফুলবেড়িয়া হাইস্কুল গদারডিহি হাইস্কুল, শীতলা হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদের হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচিয়ে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বন দফতর ও প্রশাসনের গাড়ি ওই পরীক্ষার্থীদের এলাকা থেকে নিয়ে যাবে। সঙ্গে থাকবে পুলিশ বাহিনী। এছাড়া দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের ঝিলিমিলি হাইস্কুল, ছেন্দাপাথর হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদেরও কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) উমর ইমাম বলেন, ‘‘বড়জোড়ার জঙ্গলে থাকা হাতিগুলির বড় অংশই তারের বেড়ার মধ্যে থাকায় ঝুঁকি অনেকটাই কম। বেলিয়াতোড়ের জঙ্গলে থাকা দু’টি হাতির গতিবিধি উপরে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’ তবে বন দফতরকে চিন্তায় রাখছে সোনামুখীর জঙ্গলে থাকা ৫৫টি হাতি। হাতিরা না ফিরে গেলে বেলিয়াতোড় ও সোনামুখী রেঞ্জের সীমানা এলাকায় জনবসতি কম থাকা একটি বড় জঙ্গলে হাতিগুলির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতর।

ডিএফও (বিষ্ণুপুর পাঞ্চেৎ) অঞ্জন গুহ জানান, জঙ্গল লাগোয়া ৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারির বিশেষ শিবির রাখা হচ্ছে। হাতিদের আনাগোনা বুঝতে নজরদারিতে বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় কন্ট্রোলরুম খোলা হচ্ছে। তিনটি এলিফ্যান্ট স্কোয়াড, বনসুরক্ষা কমিটি ও হুলাকর্মী রাখা আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন