হাসপাতালেই গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মহত্যা

কিন্তু লাল্টুবাবু ব্লেড পেলেন কোথা থেকে? লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডে এক রোগী নখ কাটার জন্য ব্লেড ব্যবহার করতেন। ওই রোগীর ছুটি হয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

তখনও বেঁচে লাল্টু। নিজস্ব চিত্র

মাসের পরে মাস ভর্তি ছিলেন যে হাসপাতালে, গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মহত্যা করলেন সেখানেই। যক্ষ্মায় আক্রান্ত এক রোগী মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়া মেডিক্যালে আত্মহত্যা করেন। চিকিৎসকেরা দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।

Advertisement

বুধবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতের নাম লাল্টু মালাকার (৪৫)। বাঁকুড়া শহরের স্কুলডাঙায় বাড়ি।

স্ত্রী লক্ষ্মী মালাকার জানান, প্রায় দু’মাস ধরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ছিলেন লাল্টুবাবু। গত দশ বছর ধরে টিবিতে আক্রান্ত হয়ে কাজকর্ম করার শক্তি তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। লক্ষীদেবী বলেন, “চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন ওনাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। এ দিকে প্রতিদিন শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করতে করতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন উনি।”

Advertisement

কিন্তু লাল্টুবাবু ব্লেড পেলেন কোথা থেকে? লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডে এক রোগী নখ কাটার জন্য ব্লেড ব্যবহার করতেন। ওই রোগীর ছুটি হয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগেই। কিন্তু ব্লেডটি ওয়ার্ডের জানালার উপরে পড়েছিল। সেই ব্লেড কখন তিনি লুকিয়ে নিজের কাছে রেখেছিলেন কেউ জানতে পারেননি। মঙ্গলবার রাত প্রায় দু’টো নাগাদ শৌচাগারে যান তিনি। তখন আমি ওয়ার্ডেই ছিলাম। কিছু ক্ষণের মধ্যে শৌচাগার থেকে স্বামীর চিৎকার শুনতে পেয়ে দৌড়ে যাই। দেখি, তাঁর গলা দিয়ে রক্ত ঝরছে।’’

চিৎকার করে ওঠেন লক্ষ্মীদেবী। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন নার্স ও চিকিৎসকেরা। রাতেই তাঁর গলায় অস্ত্রোপচার করা হয়। এ দিন দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গলায় ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় বেডে শুয়ে রয়েছেন লাল্টুবাবু। অক্সিজেন চলছিল। পাশেই ছিলেন স্ত্রী ও তাঁর বড় ছেলে ভোলা। ভোলা বলেন, “বাবা রিকশা চালাতেন। কীভাবে ওই রোগ বাঁধল জানি না। তবে যখন ধরা পড়ে, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন।’’ বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “ঘটনার পরেই বিশেষ অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। সকাল পর্যন্ত তাঁর শারীরিক অবস্থা বেশ কিছুটা স্থিতিশীলও ছিল। যদিও তার পরে শেষ রক্ষা করা গেল না।” ব্লেড পাওয়া প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কোথা থেকে তিনি ব্লেড পেলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন