Thunderstorm: ঝড়-জলে ক্ষতির সঙ্গে বিঘ্ন বিদ্যুতে, স্বস্তি গরম কমায়

প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন থাকার পরে রাজনগরে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়েছে রবিবার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ০৬:৫০
Share:

বিভ্রাট: ঝড়ে হেলে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। রাস্তায় ছিঁড়ে পড়েছে তার। দুবরাজপুরে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

সেই সোমবার থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলা জুড়ে। তাতে পারদ নেমে গরম থেকে স্বস্তি মিলল সকলের। তবে, ঝড়ের হাত ধরে বিক্ষিপ্ত ক্ষয়ক্ষতির খবরও মিলেছে। বিদ্যুৎহীন থেকেছে বহু এলাকা। জেলায় বৃষ্টি হয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও।

Advertisement

এ দিকে, কালবৈশাখীর দাপটে বিদ্যুৎ পরিষেবায় বিপর্যস্ত হয়েছে রাজনগর এবং দুবরাজপুরের একাংশ। শনিবার বিকেলের প্রবল ঝড়ের পরে সোমবার বিকেল। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পরেও খয়রাশোল, দুবরাজপুরের কিছু জায়গায় আসেনি কারেন্ট। রবিবার সন্ধ্যার ঝড়-জলেও নতুন করে ক্ষতি হয়েছে সিউড়ি ও সংলগ্ন এলাকায়। তিলপাড়া পঞ্চায়েতে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে আহত হন এক জন। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনগর, খয়রাশোল ও দুবরাজপুর মিলিয়ে গোটা পঞ্চাশেক বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে। সবচেয়ে সমস্যা হয়েছে দুবরাজপুরের কুখুটিয়া থাকে সারিবাগান পর্যন্ত ৩৩ হাজার ভোল্ট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎবাহী ১১টি খুঁটি ভেঙে যাওয়ায়। বেঁকে গিয়েছে লোহার পোলও। রাত-দিন কাজ করেও তাই সোমবার বিকেল পর্যন্ত পরিষেবা সম্পূর্ণ চালু করা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন থাকার পরে রাজনগরে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়েছে রবিবার। খয়রোশোলের বিরাট তল্লাট অন্ধকারে ডুবে ছিল রবিবার গোটা রাত। দুর্ভোগে পড়েন এলাকাবাসী। রাজনগর থেকে বিদ্যুৎ টেনে সোমবার সকাল থেকে পরিষেবা দেওয়া হলেও বহু গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি সোমবার বিকেলেও। বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার কৃষ্ণকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘সাধ্য মতো চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দুবরাজপুরের কুখুটিয়া গ্রামের কাছে হাইটেনশন লাইনে কাজ চলছে। আশাকরি সোমবার সন্ধ্যার মধ্যেই পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’

Advertisement

এর মাঝে রবিবার সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টিতে জেলা সদর ও আশেপাশের গ্রামে আবার কোথাও গাছের ডাল ভেঙেছে। উড়েছে বাড়ির চাল। দেওয়াল পড়ে আহত হয়েছেন এক ব্যক্তি। রবিবার বিকেলে আকাশ ছিল মেঘলা। সন্ধ্যায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। তাতে সিউড়ি ১ ব্লকের নগরী পঞ্চায়েতের পাথরচাপুড়ি, কোড়াপাড়া সহ একাধিক বাড়ির চাল উড়ে যায়। মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের চাঙ্গুরিয়া গ্রামে প্রায় পাঁচটি গাছ পড়ে গিয়েছে। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় একাধিক বাড়ির অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে। আলুন্দা পঞ্চায়েত এলাকার একটি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দু’একটি বাড়ির চাল উড়েছে সেখানেও। সিউড়ি ২ ব্লকেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিলপাড়া পঞ্চায়েতের অজয়পুর মানারপাড় এলাকায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে ধরম মাহারা নামে এক বাসিন্দা আহত হন। সন্ধ্যায় বাড়ির বারান্দায় বসেছিলেন। হঠাৎ ঝড়ে মাটির দেওয়াল পড়ে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন।

গত মঙ্গলবার থেকে লাগাতার বৃষ্টি চলায় এক ধাক্কায় নেমেছে পারদও। গরম থেকে স্বস্তি মিলেছে। শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরে জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও শুধু শনিবার বোলপুর, শান্তিনিকেতন এলাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রবিবারও বোলপুরে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সোমবারও সন্ধ্যাতেও বোলপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের সঙ্গে চলে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি।

রাজ্যের একাধিক জেলার পাশাপাশি বীরভূমের তাপমাত্রা এখন ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩-২৪ ডিগ্রি। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রার খুব বেশি হেরফের হবে না বলেও খবর। শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইন-চার্জ বিষ্ণুপ্রসাদ কোনাই বলেন, “আগামী কয়েক দিনও বিকেলে বৃষ্টি হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন