জমায়েত আদিবাসী মহিলাদের
Deucha Pachami

Deucha Panchami: হরিণশিঙায় মাওবাদীদের নামে পোস্টার

মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার পাওয়া গেল ডেউচা-পাঁচামি এলাকায়। ফলে পুলিশ প্রশাসনের মাথাব্যথা আরও বাড়ল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২০
Share:

হরিণশিঙায় আদিবাসী মহিলাদের মিছিল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় কয়লা খনির বিরুদ্ধে স্বর ক্রমে বাড়ছে। বৃহস্পতিবার কয়লা খনির সমর্থনে শাসকদলের মিছিলের বিরুদ্ধে ‘রুখে’ দাঁড়ানোয় দেওয়ানগঞ্জে আদিবাসী মাহিলাদের উপর পুলিশের লাঠি চালানোর অভিযোগ ঘিরে তেতে আছে এলাকা। তার মধ্যেই মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার পাওয়া গেল ডেউচা-পাঁচামি এলাকায়। ফলে পুলিশ প্রশাসনের মাথাব্যথা আরও বাড়ল।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে হরিণশিঙা থেকে ঝাড়খণ্ডের কাঠপাহাড়ি যাওয়ার পথে, মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত খনি এলাকায় মহুয়া গাছ, দেওয়ালে মাওবাদী নামাঙ্কিত বেশ কয়েকটি পোস্টার সাঁটানো থাকতে দেখা যায়। কিছু পোস্টার মাটিতেও পড়েছিল। সাদা কাগজের উপরে লাল কালিতে হিন্দিতে লেখা ছিল ‘হামলোগ আপকে সাথ হ্যায়’। খনির বিরুদ্ধ অবস্থানকে সমর্থন জানাতেই পোস্টারগুলি দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছেন জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।

বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘এমন কয়েকটি পোস্টার দেওয়া হয়েছে শুনেছি। তবে, পুলিশ পায়নি। সম্ভবত কেউ বদমায়েশি করে পোস্টারগুলি দিয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’

Advertisement

পুলিশ সুপার এ কথা বললেও বিষয়টি হাল্কা করে দেখছে না প্রশাসন। এমনিতেই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া মহম্মদবাজার ব্লক ‘মাওবাদী উপদ্রুত’ হিসেবে চিহ্নিত। তার উপরে খনি নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে ওই তল্লাটে। এ দিনই ‘খনি চাই না’ স্লোগান তুলে একটি বিশাল মিছিল ও জমায়েত করেছেন হরিণশিঙা গ্রামের আদিবাসী মহিলারা। তাঁদের শরীরী ভাষা যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিল। সকলের হাতে ছিল লাঠি, ঝাঁটা, কারও কারও হাতে তির-ধনুকও দেখা গিয়েছে।

ডেউচা-পাঁচামি ‘আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটি’র সদস্যরারা দেওয়ানগঞ্জের এ দিনের সভার জন্য গত শনিবার এলাকায় লিফলেট ছড়াতে গিয়েছিলেন। তখন এই হরিণশিঙাতেই তাঁদের লিফলেট বিলি করতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু, বৃহস্পতিবার দেওয়ানগঞ্জে শাসক দলের মিছিলকে ‘বাধা’ দেওয়া এবং পরবর্তী ঘটনাক্রমের প্রেক্ষিতে হরিণশিঙা গ্রামের আদিবাসী মহিলারা খনি-বিরোধী জমায়েত ও মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেন। শুক্রবার সকালেই ঢেঁড়া পিটিয়ে প্রচার করেন তাঁরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই জমায়েত ও মিছিল আয়োজনে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কিছু যুবক। সেই তালিকায় এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীও রয়েছেন। প্রশাসনের একাংশের দাবি, বাইরে থেকে বেশ কিছু মানুষের উস্কানিতে ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে খনি-বিরোধী স্বর। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশও আড়ালে মানছেন, পরিস্থিতি জটিল আকার নিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে এ দিন সিউড়িতে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডেউচা-পাঁচামির ঘটনা লালগড় আন্দোলনের কথা মনে করাচ্ছে। আদিবাসী সমাজ তখনও শাসকদলের দাপটকে রুখে দিয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার পুলিশ গিয়ে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে যা করেছে, তা লালগড়ের ছিতামণি মুর্মুকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

অন্য দিকে, জেলা প্রশাসনের ঘোষণা মাফিক এ দিন থেকে জমিদাতা পরিবারের জন্য চাকরির আবেদনপত্র বা সমীক্ষাপত্র বিলি হয়নি হিংলো পঞ্চায়েত থেকে। পরিস্থিতি বিচার করে এখনই পঞ্চায়েত থেকে ফর্মগুলি বিলি না-করে যাতে ব্লক অফিস থেকে বিলি করা হয়, সে ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে। তবে, আবেদনপত্র পূরণের কাজ শুরু হয়েছে বলে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন