Online Examination

online exam : দল বেঁধে ‘বই খুলে’ মাঠে, চলল পরীক্ষা

আট-দশ জন গোল হয়ে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। কারও সামনে খোলা বই। কারও চোখ আবার মোবাইলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৪
Share:

আট-দশ জন গোল হয়ে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। কারও সামনে খোলা বই। কারও চোখ আবার মোবাইলে। নিজস্ব চিত্র।

কলেজের পিছনের মাঠ। দুপুরের দিকে সাধারণত ফাঁকাই থাকে। কিন্তু শুক্রবার দেখা গেল, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আট-দশ জন গোল হয়ে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। কারও সামনে খোলা বই। কারও চোখ আবার মোবাইলে। ছবিটা, পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর কলেজের।

Advertisement

কলেজের অধ্যক্ষ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘পঞ্চম সিমেস্টারে ন’শোর মতো পড়ুয়া আছেন কলেজে। কে, কী ভাবে পরীক্ষা দিচ্ছেন, তা কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষে দেখা কোনও ভাবে সম্ভব নয়। তবে কলেজের ক্যাম্পাসে কোথাও এ ভাবে অনেকে এক সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন, এমন অভিযোগ আসেনি।”

সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুবলচন্দ্র দে বলেন, ‘‘ঘটনাটি কাঙ্ক্ষিত নয়। বিষয়টি জানার পরেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখা হবে।”

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ দিন পঞ্চম সিমেস্টারের কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের ‘প্রোগ্রাম কোর্স’ (পাস কোর্স), ‘এসইসি’ (স্কিল এনহ্যান্সমেন্ট কোর্স)-র পঞ্চাশ নম্বরের পরীক্ষা ছিল। দুপুরের দিকে কলেজের পেছনের মাঠে গিয়ে দেখা গিয়েছে, সেখানে হাজির প্রায় শ’দুয়েক পড়ুয়া। অনেকেই এক সঙ্গে গোল হয়ে বসে উত্তরপত্রে উত্তর লিখছেন। নাম জানাতে অনিচ্ছুক কিছু পড়ুয়া বলেন, ‘‘এসইসি পরীক্ষাটা ঘরে বসে দেওয়ার কথা। কিন্তু এক সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিলে সুবিধা হবে বলেই বন্ধু-বান্ধবেরা আগাম আলোচনা করে কলেজের মাঠে এসেছি।” কিন্তু এ ভাবে পরীক্ষা দেওয়া কি ঠিক? তার কোনও উত্তর মেলেনি পড়ুয়াদের তরফে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অনলাইন এই পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে, প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় উত্তরপত্রের নমুনাও। পরীক্ষার্থীরা তা ‘ডাউনলোড’ করে প্রিন্ট করিয়ে নিয়ে তাতে পরীক্ষা দেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর লেখা শেষের পরে, এক ঘণ্টার মধ্যে তিনটি পদ্ধতিতে উত্তরপত্র জমা করতে পারেন পরীক্ষার্থীরা। কলেজে সশরীরে উপস্থিত হয়ে বা কলেজের পোর্টালে উত্তরপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকের কাছে ইমেলে উত্তরপত্র জমা দেওয়া যায়। রঘুনাথপুর কলেজ সূত্রে খবর, কলেজের বেশির ভাগ পড়ুয়াই কলেজে গিয়েই উত্তরপত্র জমা করেন।

এ দিনের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মত, অনলাইনে পরীক্ষা হওয়ায় বহু ছাত্রছাত্রী বাড়িতে বই দেখে বা ইন্টারনেটে ‘সার্চ’ করে উত্তর খুঁজে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। এ বারে তা প্রকাশ্যে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ দিন যে সব পড়য়া ‘অনৈতিক’ ভাবে পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরীক্ষা নিয়ামক বলেন, ‘‘কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইলের মাধ্যমে পরীক্ষা দিলে, সেগুলির ক্যামেরার মাধ্যমে পরীক্ষার সময়ে নজরদারি চালানো যেতে পারে। কিন্তু কোনও পড়ুয়াকে ওই তিন মাধ্যমেই পরীক্ষা দিতে আমরা বাধ্য করতে
পারি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন