Dengue

জমা জল ডিঙিয়ে মশা মারার বৈঠকে

বিষ্ণুপর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক  রমেন্দ্রনাথ প্রামানিককে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সামান্য বৃষ্টির জল জমেছে। বালি ছড়িয়ে দেব।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৬
Share:

মশার আঁতুড়: মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে। ছবি: শুভ্র মিত্র

থইথই জল বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলা দফতরের এক তলায়। তার মধ্যে বিছিয়ে রাখা ইটের উপর দিয়ে আধিকারিক এবং কর্মীরা যান মশা নিধনের বৈঠকে যোগ দিতে।

Advertisement

রাজ্য জুড়ে মশাবাহিত রোগ নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পুরুষ মেডিসিন বিভাগে ১৩ জন, মহিলা মেডিসিন বিভাগে ৯ জন আর শিশু বিভাগে ৩ জন জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। দশ দিন আগে সেই সংখ্যাটাই ছিল ১৩। এই পরিস্থিতিতে অনেক রোগীর পরিজনেরা কটাক্ষ করে বলছেন, হাসপাতালের এক তলায় মশাদের প্রসূতি বিভাগ। বিষ্ণুপর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামানিককে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সামান্য বৃষ্টির জল জমেছে। বালি ছড়িয়ে দেব।’’

শুধু বিষ্ণুপর স্বাস্থ্য জেলা অফিস নয়, বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের চারপাশও আগাছা আর ছোট বড় জল ভরা গর্তে ভর্তি। জরুরি বিভাগের সামনে তো বটেই, ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনেও একই দশা— ভিতরে কর্মীরা রক্তদাতাদের শরীরে সূচ ফোটাচ্ছেন, বাইরে রোগীর পরিজনের শরীর হুল ফোটাচ্ছে মশা। হাসপাতাল চত্বরে কোথাও দেখা গেল ট্যাঙ্ক উপচে জল জমা হচ্ছে। আগাছা আর নোংরা ছড়িয়ে অনেক জায়গায়। হেতাগোড়া থেকে নিমাই লোহার, বিষ্ণুপুর শহর থেকে অর্পণ মুখোপাধ্যায়রা হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁরা বলেন, ‘‘হাসপাতালেই যদি পরিবেশ এ রকমের হয়, রোগীর দশা কী হবে সেটা সহজে বোঝা চলে।’’

Advertisement

বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার তথা বিষ্ণুপুর বিষ্ণুপর স্বাস্থ্য জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পৃথ্বীশ আকুলি বলেন, ‘‘পুরসভাকে অনেক বার বলা হয়েছে।’’ পুরসভার বিরুদ্ধে দায়সারা মনোভাবের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি-ও। বিষ্ণুপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখ চিঠি দিয়ে আমি মশার দাপট বাড়ছে জানিয়ে কামানগুলি ব্যবহার করতে বলেছিলাম। কিন্তু কোনও হেলদোল দেখছি না। শুনছি কামানগুলি নাকি খারাপ।’’ যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। দফতরের এক কর্মীর দাবি, প্রত্যেক দিন সাত জনের দু’টি দল শহরে অভিযান চালাচ্ছে। ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। অভিযানে কামানও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তাঁর দাবি।

কিন্তু হাসপাতালের কী হবে? রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য হরিপ্রসন্ন মিশ্র বলেন, ‘‘ভাবছি সবাই মিলে একটা আবর্জনা পরিস্কার অভিযান করা যায় কি না। আলোচনা করছি।’’ অনেক রোগীর পরিজনেরা বলছেন, ‘‘সিদ্ধান্ত নিতে নিতে অবস্থা না আরও খারাপ হয়ে যায়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন