কান্না: পাটপুরের আড়াডাঙার বাড়ির সামনে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
গণপিটুনিতে মৃত্যু হওয়া বাঁকুড়ার যুব তৃণমূল কর্মীর দেহ এলাকায় আসতেই নামল শোকের ছায়া। কালো ব্যাজ পরে ঘটনার প্রতিবাদ জানালেন পড়শিরা। পরিজনেরা ভেঙে পড়লেন কান্নায়।
১৪ মে, ভোটের দিন বাঁকুড়ার ধলডাঙা এলাকায় গণধোলাইয়ে জখম হন রমেশ বাগদি নামে ওই যুবক।
বিজেপি অভিযোগ, তৃণমূলে লোকজন বুথ দখল করতে এসেছিল। স্থানীয় মানুষজন প্রতিরোধ করলে তারা পালায়। সেই সময়ে মোটরবাইক থেকে পড়ে যান রমেশ। তার উপরে চড়াও হয় ক্ষুব্ধ জনতা।
যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খান গোড়া থেকেই বুথ দখলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, এলাকার এক জনের কাছে টাকা পেতেন রমেশ। সেটাই চাইতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়।
জখম অবস্থায় রমেশ ভর্তি ছিলেন দুর্গাপুরের একটি নার্সিংহোমে। শনিবার বিকেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। রবিবার বিকেলে দুর্গাপুর থেকে রমেশের দেহ এনে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট বাইপাসের কাছে তৃণমূল ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দলের জেলা নেতারা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এর পরে রমেশের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়ার প্রগতি সঙ্ঘ ক্লাবে। প্রগতি সঙ্ঘের হয়ে ফুটবল খেলতেন বছর ঊনত্রিশের ওই যুবক।
ক্লাব থেকে দেহ বাড়িতে নিয়ে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রমেশের মা প্রতিমা বাগদি, বাবা সুবল বাগদি। পড়শিদের চোখেও জল। এ দিন মৃত যুবকের বাবা মা কথা বলার অবস্থাতেই ছিলেন না। অন্য আত্মীয়েরাও কোনও কথা বলতে চাননি। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব জনপ্রিয় ছিল রমেশ। আমরা চিরকাল ওর অভাব বোধ করব।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান এবং জেলা নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি তুলছি আমরা।’’ রবিবার জেলা তৃণমূলের একটি বৈঠক ছিল। রমেশের মৃত্যুতে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়।
গণপিটুনির ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, ‘‘খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছিল। এ বারে খুনের মামলা হিসাবে দেখা হবে।’’